খাবার নেই। শরীর দুর্বল। পেঙ্গুইনদের মৃতদেহ পরীক্ষা করে চমকে উঠেছেন গবেষকরা। গত কয়েকদিনে ভয়াবহ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে আটলান্টিকে। হাজার হাজার পেঙ্গুইনের দেহ ভেসে আসছে উরুগুয়ের পূর্ব উপকূলে। বেশিরভাগই তরুণ পেঙ্গুইন। আছে বাচ্চাও। অনাহারে আর দুর্বলতার কারণেই পেঙ্গুইনের মৃত্যু হচ্ছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান প্রাণীবিদদের।
দ্য ওয়ালের খবরে বলা হয়েছে, অনেক সময় অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে এভাবে পেঙ্গুইনদের মৃত্যু হয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে সেটা কারণ নয় বলেই জানা যাচ্ছে।
খবরে বলা হয়েছে, আটলান্টিক সাগরে ভাসতে ভাসতে দেহগুলো পৌঁছেছে উরুগুয়ের উপকূলে। উরুগুয়ের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কারমেন লেজাগোয়েন জানিয়েছেন, বেশিরভাগ পেঙ্গুইনের শরীরেই কোনও খাবার পাওয়া যায়নি। মৃতদেহ পরীক্ষা করে বোঝা গেছে, তাদের কোনও অসুখের কারণে মৃত্যু হয়নি। মৃত্যুর কারণ অনাহার। দিনের পর দিন না খেয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে হাজার হাজার পেঙ্গুইনের। সংখ্যাটা এরই মধ্যে দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
ম্যাগেলানিক প্রজাতির পেঙ্গুইনদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশই কমবয়সি ও বাচ্চা। ম্যাগেলানিকদের বাস দক্ষিণ আর্জেন্টিনায়। প্রতি বছর খাবার ও উষ্ণ আবহাওয়ার খোঁজে তারা ব্রাজিলের উপকূলে আসে। এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, এভাবে কিছু পেঙ্গুইনের মৃত্যু হয়ে থাকে ঠিকই, তবে এত বেশি সংখ্যায় হওয়াটা স্বাভাবিক নয়।
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, আর কয়েক বছরের মধ্যে জলবায়ু বদলের প্রভাব করোনা মহামারির থেকেও প্রাণঘাতী হবে। বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে, বিষাক্ত গ্যাসে ছেয়ে যাচ্ছে পরিবেশ তার থেকেই অনুমান করা যায় ২১০০ সালের মধ্যে জলবায়ুর পরিবর্তন পাঁচ গুণ বেশি বিপর্যয় নিয়ে আসবে পৃথিবীতে।
আন্টার্কটিকায় বরফ গলতে শুরু করেছে। পশ্চিম আন্টার্কটিকায় উপকূল বরাবর দুই বিশাল হিমবাহে ভাঙন ধরেছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। জাতিসংঘের ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) রিপোর্ট দিয়েছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা আরও ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বাড়তে পারে। তাপমাত্রার বদল হলে এর প্রভাব পড়বে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রেও। পানির উষ্ণতা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়লে সামুদ্রিক প্রাণীজগত ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বেশ কিছু প্রজাতির মাছের আকার ছোট হতে থাকবে। অস্তিত্ব লোপ পাবে অনেক প্রজাতির।