আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নারী শিক্ষার্থীদের আবারও ভর্তি নিতে প্রস্তুত রয়েছে, তবে এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন তালেবানের শীর্ষনেতার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তালেবান শীর্ষনেতা যদি আবার কখনো অনুমতি দেন, তবে কেবল সেক্ষেত্রেই নারী শিক্ষার্থীদের পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হবে।
দেশটির এক শিক্ষা কর্মকর্তা শনিবার এ কথা জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসেবে আফগানিস্তানেই নারী শিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর আফগান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নারীদের জন্য পৃথক শ্রেণিকক্ষ ও প্রবেশপথ চালু করেছিল তালেবান। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের শুধু নারী শিক্ষক বা বয়স্ক পুরুষ শিক্ষক পড়াতে পারতেন। গত ডিসেম্বরে আফগানিস্তানের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলেছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নারী শিক্ষার্থীদের যেন পাঠদান করা না হয়।
এর ধারাবাহিকতায় গত জানুয়ারির শেষ দিকে আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে তালেবান।
আফগানিস্তানের উচ্চ শিক্ষা বিষয়কমন্ত্রী নিডা মোহাম্মদ নাদিম বলেন, ওই সময়ে নারী ও পুরুষের অবাধ মেলামেশা বন্ধের জন্য নারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করা অপরিহার্য ছিল। এর পাশাপাশি ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কিছু বিষয় পড়ানো হতো যা ইসলামের বিধান পরিপন্থি।
তিনি জানান, তালেবান নেতা হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা কর্তৃক আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, যা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।
আফগানিস্তানের উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মৌলভী আবদুল জব্বার জানান, দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নারী শিক্ষার্থীদের পুনরায় ভর্তি নিতে প্রস্তুত আছে। হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া মাত্রই তারা নারী শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু করবে। তবে সেটা কবে নাগাদ ঘটবে সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তিনি।
আবদুল জব্বার এপিকে বলেন, ‘হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা বন্ধের আদেশ দিয়েছিলেন, তাই বন্ধ করা হয়েছিল। যখন আবার তিনি শুরু করতে বলবেন তখন আবার শুরু হবে। আমাদের সব নেতাই [মেয়েদের শিক্ষা পুনরায় শুরুর] পক্ষে আছেন, এমনকি আমাদের মন্ত্রীরাও এর পক্ষে রয়েছেন।’