লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ২০২০ সালের ১৫ জুন চীনের সেনাদের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ভারতীয় সেনা। এতে দুই পক্ষের অনেক সেনার মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছিল। রাতারাতি ৬৮ হাজার সেনাকে লাদাখে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল ভারত।
ভারতের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার শীর্ষ সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
খবরে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে ভারত। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তা মোকাবেলায় রাতারাতি নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয় লাইন অব কন্ট্রোলে (এলওসি)। এর জন্য ৬৮ হাজার সেনা, ৯০টি ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য অস্ত্র আকাশপথে সেখানে উড়িয়ে নেয় ভারত। তাদের পূর্ব লাদাখে মোতায়েন করা হয়।
সেই সময় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নজরদারি চালানো এবং শত্রুপক্ষের পদক্ষেপের দিকে চোখ রাখতে এসইউ-৩০ এমকেআই এবং জাগুয়ার জেট মোতায়েন করে ভারতীয় বিমানবাহিনী। এর পাশাপাশি যুদ্ধবিমানের বহু স্কোয়াড্রন নামানো হয় সেখানে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এইসব বাহিনী এবং অস্ত্রশস্ত্র প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার প্রতিকূল এলাকাগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয়।
সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, যদি কোনো কারণে যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে যেন কোনো খামতি না থাকে সেজন্য সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেয় ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলো। এছাড়া দুর্গম অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত এয়ারক্রাফটও মোতায়েন করে ভারত।
ওই সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু ও এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনার একাধিক ব্রিগেডকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ৬৮ হাজারের বেশি জওয়ান ছিলেন তাতে। ৯০টির বেশি ট্যাঙ্ক, প্রায় ৩৩০ বিএমপি পদাতিকবাহিনী গাড়ি, ব়াডার সিস্টেম, আর্টিলারি বন্দুক এবং অন্যান্য অনেক সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া হয়।
গালওয়ানের সংঘর্ষের পর সেখানে রাফায়েল ও মিগ-২৯সহ বহু যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে ভারত। এর পাশাপাশি বিমানবাহিনীর প্রচুর সংখ্যক হেলিকপ্টার শুধু পরিবহনের জন্যই প্রস্তুত রাখা হয়।
খবরে বলা হয়েছে, এসইউ-৩০ এমকেআই এবং জাগুয়ার ফাইটার জেটগুলোর নজরদারির পরিসীমা ছিল প্রায় ৫০ কিলোমিটার। সেগুলোর সাহায্যে চীনা সেনাদের অবস্থান এবং গতিবিধি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল।
আইএএফ সূত্র জানিয়েছে, অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে এই বিপুল সেনা বহরকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় পূর্ব লাদাখে। এর থেকে স্পষ্ট, গত কয়েক বছর ধরে কীভাবে ভারতীয় বিমানবাহিনীর কৌশলগতভাবে এয়ার লিফট দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া চীনের কার্যকলাপের ওপর নজরদারি করার জন্য ওই এলাকায় প্রচুর সংখ্যক রিমোটলি পাইলটেড এয়ারক্রাফ্ট মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ওই সূত্র।