নাইজারের রাজধানী নিয়ামিতে অবস্থিত ফ্রান্স দূতাবাসের বিদ্যুৎ, পানিসহ জরুরি সেবা বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সামরিক সরকার। শুধু তাই নয়, বাইরে থেকে দূতাবাসে কোনো খাবারও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সেখানকার একাধিক স্থানীয় সূত্রের বরাতে এসব তথ্য জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
সোমবার (২৮ আগস্ট) তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে জানা গেছে, নাইজারের জিন্দারে অবস্থতি ফরাসি ক্যানসুলেটেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, নাইজারে ফরাসি ঘাঁটির পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও খাদ্য পণ্য স্থগিত করার নিদের্শ দিয়েছেন ন্যাশনাল সাপোর্ট কমিটি ফর দ্য সেফগার্ডিং অব কান্ট্রির (সিএনএসপি) সভাপতি এল ইসা হাসুমি বোরিমা। এমনকি, যারা পণ্য ও সেবা সরবরাহে ফরাসিদের সহায়তা করবে তারা জনগণের শত্রু বলে বিবেচিত হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
এর আগে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে নাইজার ছাড়তে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম বেঁধে দেয় জান্তা। শনিবার (২৭ আগস্ট) প্ল্যাকার্ড বহন করে ফ্রান্সবিরোধী স্লোগান দেয় জান্তা সমর্থকরা। নাইজারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য ফ্রান্স সরকারকে অভিযুক্ত করে আসছে তারা। ফরাসি সেনা ও রাষ্ট্রদূত নাইজার না ছাড়লে তাদের দূতাবাস ও সামরিক ঘাঁটিতে হামলার হুমকিও দেওয়া হয় সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে।
এর আগে নাইজারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাকেরি সাঙ্গারি জানিয়েছিলেন, ফরাসি রাষ্ট্রদূত সিলভাইন ইত্তে তার সঙ্গে দেখা করার আমন্ত্রণে সাড়া দেননি। এছাড়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকায় গত শুক্রবার (২৬ আগস্ট) ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে নাইজার ছাড়ার নির্দেশ দেন বাকেরি সাঙ্গারি।
এদিকে ওই দিন সন্ধ্যায় ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বল প্রয়োগ করে ক্ষমতায় বসা কোনো সরকার এমন অনুরোধ করার ক্ষমতা রাখে না। কোনো রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ক্ষমতা শুধুমাত্র বৈধভাবে নির্বাচিত কর্তৃপক্ষই করতে পারে।
নাইজারে ফ্রান্সের দেড় হাজার সেনা মোতায়েন আছে। কয়েক বছর ধরে এই সেনা সদস্যরা বিভিন্ন জিহাদি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাজোম সরকারকে সহযোগিতা করেছে। নাইজারে যুক্তরাষ্ট্রেরও প্রায় এক হাজার সেনা মোতায়েন আছে।
নাইজারে গত ২৬ জুলাই প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রাক্তন কমান্ডার জেনারেল আবদুরাহামানে চিয়ানি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটান ও মোহাম্মদ বাজোমকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। প্যারিস শুরু থেকেই এ সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে আসছে। তাদের দাবি, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাজোমকে অবশ্যই ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে হবে।