সারা দেশে বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে। এই হরতালে অফিস আদালতের মতো খোলা রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। তবে শঙ্কা নিয়ে অভিভাবকেরা সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠান। আর শঙ্কার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিও ছিল বেশ কম।
রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবে আজকের দিনটির জন্য শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখেছিলেন শিক্ষকরা। এছাড়া কোনো স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল প্রায় অর্ধেক।
রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অবস্থিত সেনপাড়া পর্বতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিনাত মহল বেলী বলেন, ‘সকালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস থাকে। অন্যান্য দিন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৮০ ভাগের ওপরে থাকে। কিন্তু আজ সকালে শিক্ষার্থী উপস্থিতি একেবারে কম ছিল। হরতালের প্রভাবে এমন হতে পারে।’
মোহাম্মদপুরের বরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদা পারভীন বলেন, ‘শিক্ষার্থী উপস্থিতি বেশ কম। প্রায় অর্ধেকের মতো উপস্থিতি। আগে সপ্তাহের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের কোলাহল থাকতো। কিন্তু আজ অনেকটা ফাঁকা লাগছে।’
এদিকে শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে কোনো ঝুঁকি না নিতে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ আগের হরতালগুলোতে খোলা রাখলেও আজ শিক্ষার্থীদের আসতে নিষেধ করা হয়েছে। অভিভাবকরা এমন দিনে যাতে উদ্বিগ্ন না থাকেন সেজন্য শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় আগামীকাল স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মুর্শেদা শাহীন ইসলাম বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে শুধু অফিস খোলা রেখেছি। কিন্তু অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ। শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুশ্চিন্তা হয়, তো তাই আজকের কার্যক্রম পিছিয়ে আগামীকাল খোলা রেখেছি। বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। আগে হরতালের মধ্যে খোলা রাখতাম। তবে অভিভাবকদের আপত্তিতে এবার এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। কারণ এক ধরনের সমালোচনা হতে পারে যে আমরা শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সচেতন নই।’
এদিকে গতকাল শনিবার বিকালে হরতাল ঘোষণার পর থেকে রাজধানীতে অর্ধশত গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। আজও রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বায়তুল মোকাররম ও তাঁতিবাজারে চারটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পায়ে হেঁটে বা রিকশায় গন্তব্য যেতে দেখা গেছে।