রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী সরকারি কলেজে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা ছাত্রীনিবাসটি উদ্বোধন করেছিলেন। একতলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাসটিতে ১২ জন ছাত্রী থাকার মতো আসবাবপত্র এবং সু-ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া ভবনটিতে রয়েছে পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ।
অযত্ন-অবহেলায় এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ছাত্রীনিবাসটি। একই সঙ্গে ভবনটি পুরো ফাঁকা এবং তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা গেছে।
জানা গেছে, ছাত্রীনিবাসটি নির্মাণের পর থেকে সেখানে কেউ থাকে না। এতে পরিত্যক্তভাবে পড়ে আছে ছাত্রীনিবাসটি। ভবনটির আঙিনার চারপাশে ধুলাবালি, আবর্জনা জর্জরিত অবস্থায় দেখা গেছে। এছাড়া ছাত্রীনিবাসের ভবনটির মূল গেইটের তালা দীর্ঘদিন না খোলার ফলে জং ধরে গেছে। ভবনের ভেতরেও ময়লা আবর্জনায় ভরা। এমনকি ভবনটির ছাদেরও বেশ বাজে অবস্থা। এভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে থাকার ফলে ছাত্রীনিবাসটি পুরোপুরি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্ণফুলী সরকারি কলেজের কয়েকজন ছাত্রী জানান, এই কলেজে অধিকাংশ শিক্ষার্থী গরীব পরিবারের সন্তান। বিশেষ করে কাপ্তাই এবং বিলাইছড়ি উপজেলার বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে অনেক শিক্ষার্থী এখানে আসে। তবে তাদের বাড়ি অনেক দূরে হওয়ায় নিয়মিত যাতায়াত করা সম্ভব হয় না। তাই অনেককেই কলেজের আশপাশের এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে অনেক টাকা ব্যয় হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের। কলেজের এই ছাত্রীনিবাসটিতে থাকার মতো পরিবেশ তৈরি করা হলে অনেক গরীব ও অসহায় শিক্ষার্থী এখানে থাকার সুযোগ পাবে। এতে তাদের অনেক উপকার হবে।
কর্ণফুলী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ এইচ এম বেলাল চৌধুরী বলেন, ছাত্রীনিবাসটি নিরাপত্তাজনিত কারণ এবং বাউন্ডারি ওয়াল না থাকার ফলে চালু করা হয়নি। ছাত্রীনিবাসটির বাউন্ডারি ওয়াল, নিরাপত্তা প্রহরী এবং হোস্টেল সুপার নিয়োগের জন্য একাধিক বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ সমস্যা দ্রুত নিরসন করা হলে ছাত্রীনিবাসটি চালু করা হবে।
কর্ণফুলী সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে প্রায় দুই হাজার ১৬৬ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে কাপ্তাই উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল থেকে অনেক শিক্ষার্থী কলেজটিতে লেখাপড়া করতে আসেন।