ভারতে নতুন করে কৃষকদের প্রতিবাদ, আন্দোলন শুরু হয়েছে। পাঞ্জাব-হরিয়াণা থেকে মঙ্গলবার ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযান ঘিরে দিল্লির অদূরে পাঞ্জাব-হরিয়াণা সীমান্ত ভারতীয় সময় ভোর থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে। ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েই কৃষকরা ভারতের রাজধানী শহরের দিকে এগোচ্ছেন।
ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিতকরণ সহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানাসহ একাধিক রাজ্যের কৃষকরা। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা, কিষাণ মজদুর মোর্চাসহ কৃষকদের ২০০টির বেশি সংগঠন এই দিল্লি চলো কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। খবর এনডিটিভির
হাজার হাজার কৃষক ট্রাক্টরে চেপে দিল্লি চলো অভিযানে যোগ দিতে এসেছেন। দলে দলে কৃষক ব্যরিকেড ভেঙে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী এদিন এগোতে চাইলে হরিয়াণা পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়, এর জেরে বেশ কিছু সংখ্যক কৃষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। মূহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গোটা এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছে সরকার। কৃষক অভিযান প্রতিরোধে দিল্লির সঙ্গে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তর প্রদেশের সংযোগকারী সব রাস্তা সোমবার ১২ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় সময় রাত থেকে বন্ধ করে দেয় দিল্লি পুলিশ।
সিঙ্ঘু সীমান্ত, টিকরি সীমান্ত এবং গাজিপুরে রারারাতি গড়ে তোলা হয় অস্থায়ী জেল। প্রশাসনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কৃষকেরা আইন-অমান্য যদি আইন অমান্য শুরু করেন তাহলে তাদের সেখানেই গ্রেফতার করে অস্থায়ী জেলে নিয়ে রাখা হবে।
রাজধানীমুখী বেশিরভাগ রাস্তায় বসানো হয় কাঁটাতারের ব্যারিকেড। রাস্তায় বসানো হয় গজাল। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও আধা সেনার প্রাচীর।
সূত্রের বরাত দিয়ে এর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, শুধু পাঞ্জাব থেকেই ১৫০০টি ট্র্যাক্টর, ৫০০ গাড়ি নিয়ে দিল্লি অভিযানে আসছেন কৃষকরা। গাড়িতে করে প্রায় ছয় মাসের খাবার নিয়ে আসছেন তারা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চর্চা শুরু হয়েছে যে, তাহলে কি আরও একটি দীর্ঘ সময়ের কৃষক আন্দোলন দেখতে চলেছে দিল্লিসহ গোটা ভারত? ২০২০ সালে দিল্লির সীমানায় যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন কৃষকেরা, সেই আন্দোলন ১৩ মাস ধরে চলেছিল।
ভারতীয় সংবামাধ্যমগুলো বলছে, এবারও কৃষকেরা সেই পথেই হাঁটতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই আগেভাগেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে দিল্লির সীমানা।
পাঞ্জাবের গুরদাসপুরের কৃষক হরভজন সিংহ বলেন, ‘সুচ থেকে হাতুড়ি, সব কিছু ট্রলিতে করে নিয়ে যাচ্ছি আমরা। ব্যারিকেড ভাঙার যন্ত্রও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা ছয় মাসের খাবার নিয়ে রওনা দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে প্রচুর জ্বালানিও রয়েছে।’