গত বছরের শেষদিকে তেহরান ও মস্কোয় অনুষ্ঠিত বৈঠকে অস্ত্র চুক্তি অনুযায়ী দু’দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষে রাশিয়াকে অন্তত ৪০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে ইরান। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ১৮৬ থেকে ৪৩৫ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। খবর রয়টার্স।
‘জুলফিকার’ নামের এসব ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ফাতেহ-১১০ গোত্রের বলে জানিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলে, ২০২৩ সালের শেষের দিকে তেহরান ও মস্কোয় পৃথক বৈঠকে এই অস্ত্রচুক্তি হয় বলে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র। পরে চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারির শুরুতে ওই অস্ত্রের চালান পাঠানো শুরু হয়।
গত বছরের শেষদিকে তেহরান ও মস্কোয় অনুষ্ঠিত বৈঠকের চুক্তি অনুযায়ী ক্ষেপণাস্ত্রের এই চালান পাঠানো হয়েছে। দুই দেশের ৬টি সূত্রের বরাতে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইরানের এক সেনা কর্মকর্তার বরাতে দ্য টেলিগ্রাফ তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, এখন পর্যন্ত অন্তত চারটি ক্ষেপণাস্ত্রের চালান পাঠানো হয়েছে, যা আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও বেশি হবে।
অপর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ক্ষেপণাস্ত্রের কিছু চালান বিমানের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়েছে, বাকিগুলো জাহাজে করে ক্যাস্পিয়ান সাগর দিয়ে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, এটি লুকানোর কোনো কারণ নেই। স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে আমরা যে কোনো দেশে অস্ত্র রপ্তানি করতে পারি।
এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। এমনকি পেন্টাগনও এখন পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
উল্লেখ্য, রাশিয়া আর ইরান সম্প্রতি তাদের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বাড়িয়েছে বহুগুণে। এ দুই দেশের এমন গভীর সামরিক সহযোগিতা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য এক প্রকার মড়াও উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতোই। রাশিয়া ও ইরান — উভয় দেশের শত্রু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; কাজেই তাদের মধ্যে এমন ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা হওয়ার কারণ প্রথম দর্শনে বোঝা কঠিন নয়। কিন্তু বিষয়টি আবার এত সরলও নয়। কারণ দমনমূলক রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সমাজে একঘরে থাকা দেশ হওয়া ছাড়া ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে মিল আছে কমই। তার ওপর রাশিয়ার আছে ইরানে আগ্রাসন চালানোর ইতিহাস।