বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাদের প্রবেশের অভিযোগে আজও উত্তাল বুয়েট। অভিযুক্ত ২১তম ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেনসহ ছয় জনকে দুপুর ২টার মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার করতে আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় মধ্যরাতে কীভাবে ছাত্র নেতারা ক্যাম্পাসে এসে মিটিং করেছিলেন সে বিষয়ে কতৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চাইছেন শিক্ষার্থীরা।
ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে আবারও উত্তাল বুয়েট। ছয় দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের পাদদেশে শনিবার সকাল থেকেই অবস্থান নিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের প্রবেশের মাধ্যমে বুয়েটে একটি কুচক্রী মহল ছাত্ররাজনীতি চালু করার অপচেষ্টা করছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মদদ ছাড়া কোনও সংগঠন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারে না। তাই দায়িত্ব অবহেলার কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের পদত্যাগ এবং ইমতিয়াজ রাব্বির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বুয়েটের বাকি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম বহিষ্কার করতে হবে। পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেয়ারও আহবান জানানো হয়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা শিক্ষার্থীদের সামনে একে একে তুলে ধরা হয়। আয়োজন করা হয় গণস্বাক্ষর কর্মসূচিরও।
এর আগে গত ২৭ মার্চ মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দফতর সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। আর ছাত্রলীগ নেতাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি।
এরপরই ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ছয় দফা দাবি পেশ করে শুক্রবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কথা বলেন শিক্ষকরা। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিল করার মৌখিক ঘোষণা দেন বুয়েটের উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদফতরের পরিচালক দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে দোষীকে শাস্তি দেয়ার আশ্বাস দেন শিক্ষকরা।
এরপর মধ্যরাতে বুয়েট প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের (স্টুডেন্ট নম্বর ২১০৪১৪১) হলের সিট বাতিল করে। এ ছাড়া সার্বিক বিষয়ে তদন্তপূর্বক সুপারিশ প্রদান করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।
কিন্তু বুয়েট শিক্ষার্থীরা শুধু হলের সিট বাতিলে সন্তুষ্ট নয় বলে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ শনিবার আবার আন্দোলনে নামে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত যা চলবে।