৪ নভেম্বর সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে এক টেলিভিশন ঘোষণায় লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের কথা জানিয়েছিলেন সাদ, তারপর থেকে তার অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
পদত্যাগের কারণ হিসেবে নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানিয়ে লেবাননের ওপর ‘একচ্ছত্র প্রভাব তৈরির’ জন্য ইরান ও হিজবুল্লাহকে দায়ী করেন তিনি। এই দুটি পক্ষ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ‘অস্থিতিশীলতা’ তৈরি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ ঘোষণার পর থেকে সৌদি আরবে অবস্থান করা সাদকে প্রকাশ্যে আর কথা বলতে দেখা যায়নি।
সৌদি আরব সাদকে ‘জিম্মি’ করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছে ইরান ও লেবাননে ইরানের শিয়া মিত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
বিবিসি জানিয়েছে, এক সপ্তাহ আগে সাদের পদত্যাগের ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলটিকে একটি ধাক্কা দিয়েছে। লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন তার পদত্যাগ মেনে নেননি।
২০১৬ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট আউন সুন্নি নেতা ও ব্যবসায়ী সাদকে লেবাননের সরকার গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করেছিলেন।
শনিবার এক বিবৃতিতে আউন বলেছেন, “এক সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরির পদত্যাগের পর থেকে তাকে ঘিরে যে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে তাতে এটা বোঝা যাচ্ছে তার অবস্থান ও তার ঘোষিত পদক্ষেপ অথবা তার নামে চালানো কথাগুলো সত্যের প্রতিফলন নয়।
প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন ও সাদ আল হারিরি। ছবি: রয়টার্স
“আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে বিরোধ তৈরি করে এমন কোনো পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানকে মেনে নেবে না লেবানন।”
সাদ কেন লেবাননে ফিরে যেতে পারছেন না, তা পরিষ্কার করতে সৌদি আরবকে বলেছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স নাম উল্লেখ না করে লেবাননের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, শুক্রবার প্রেসিডেন্ট আউন একদল বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন হারিরি ‘অপহৃত’ হয়েছেন এবং তার কূটনৈতিক ছাড় পাওয়া উচিত।
তবে আউন একথা বলেছেন বলে দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করেনি লেবানন।
এ পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক শক্তি শিয়া প্রধান ইরান ও সুন্নি প্রধান সৌদি আরবের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার ঘূর্ণাবর্তে লেবানন পড়তে যাচ্ছে সম্ভাবনায় বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
‘ছায়া যুদ্ধের ক্ষেত্রে হিসেবে’ লেবাননকে ব্যবহার না করার জন্য শুক্রবার অন্যান্য দেশকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ দিন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন জানিয়েছেন, হারিরি মুক্ত আছেন এমন নিশ্চয়তা পেয়েছেন তিনি এবং হারিরিকে লেবাননে ফিরে যেতে উৎসাহিত করেছেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কোনো লড়াই ধ্বংসাত্মক ফলাফল বয়ে আনতে পারে।”