হামলা-হত্যা-নির্যাতনের শিকার জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিয়ে যখন সারা বিশ্বে তুমুল বিতর্ক এরই মধ্যে তিন দিনের সফরে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার পৌঁছেছেন ক্যাথলিক চার্চপ্রধান পোপ ফ্রান্সিস।
সোমবার সকালে এই ধর্মগুরু দেশটির পুরাতন রাজধানী ইয়াঙ্গুনের বিমানবন্দরে পৌঁছালে মিয়ানমারের ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরিহিত শিশুরা তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান । খবর রয়টার্সের।
পোপ এ সময় তিনি শিশুদের আদর করেন। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নীল একটি টয়োটা প্রাইভেটকারে করে শহরের কেন্দ্রস্থলে সেন্ট মেরি’স ক্যাথিড্রালে যান। পথে পথে শত শত মানুষ নানা রঙের ফ্ল্যাগ নিয়ে পোপকে স্বাগত জানান। পোপ গাড়ি থেকে তাদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। মিয়ানমার সফর শেষে পোপের বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে।
পোপ ইতালির রোম থেকে ১০ ঘন্টার বিমান যাত্রা শেষে মিয়ানমার পৌছেন। এই সফরে পোপ যেন ‘রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা’র খাতিরে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার না করেন, সে জন্য দেশটির খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে পোপকে আগে থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি এর আগে পোপ ‘রোহিঙ্গা ভাইবোন’ শব্দটি ব্যবহার করে তাদের প্রতি সহমর্মিতার কথা উল্লেখ করেছিলেন। ফলে এখন দেখার বিষয়, পোপ তাঁর এ সফরের সময় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেন কি না?
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানোর জন্যে দেশটির সামরিক বাহিনীকে দায়ী করা হচ্ছে। এ অঞ্চলে ব্যাপক দমন-পীড়ন চালানোয় বিগত তিন মাসে ছয় লাখের বেশী রোহিঙ্গা দেশটি থেকে পালিয়ে এসে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
খবরে বলা হয়, সফরকালে পোপ ফ্রান্সিস মিয়ানমারের ক্ষমতাধর সেনাপ্রধান মিন অং হলাংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে তাঁর নোবেল বিজয়ী বেসামরিক নেত্রী অং সান সু চি’র সঙ্গেও সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সাত লাখ ক্যাথলিক খ্রিস্টান অনুসারী রয়েছে যা দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশ। মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা হচ্ছে ৫ কোটি ১০ লাখ। এদিকে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে ফ্রান্সিস টুইটারে সকলের প্রতি শুভেচ্ছা ও বন্ধুত্বের বার্তা পাঠিয়েছেন। এএফপি।