শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের দেয়া আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে দাবিপূরণের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের দাবিতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন।
মঙ্গলবার দুপুরে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিনয় ভূষণ রায় বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম। মন্ত্রী আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস দিতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।
এর আগে তাদের অনশন ভাঙাতে বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশনস্থলে যান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সেখানে অনশনরত শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অনেক চেষ্টার পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছ থেকে সম্মতি আদায় করতে পেরেছি। এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেজন্য নীতিমালা করতে হবে। সময় দরকার।’
এসময় অনশনরতরা নির্দিষ্ট দিন দেয়ার দাবি জানান। তারা ‘কবে’ ‘কবে’ বলে চিত্কার করতে থাকে। পরে মাইক নিয়ে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বিনয় ভূষণ।
টানা সপ্তম দিনের মতো গতকাল সোমবারও আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকরা। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে বছরের প্রথম দিনেও আন্দোলন অব্যাহত ছিল। আমরণ অনশন কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে গতকাল শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে কেউ কেউ শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। শিক্ষকরা বলেন, অনশন চলাকালে মৃত্যুর খবর শোনার আগেই প্রধানমন্ত্রী স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেবেন।
সরকারের পক্ষ থেকে এমপিওভুক্তির কোনো ঘোষণা বা আশ্বাস না পাওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষকরা। তারা বলেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা প্রেসক্লাবের সামনেই অবস্থান করবেন।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের কৃতিত্বের দাবিদার হলেও আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সেই ফলাফলের আনন্দে অংশীদার হতে পারিনি। তাছাড়া পহেলা জানুয়ারি বই উত্সবেও অংশগ্রহণ করতে পারিনি। এটা আমাদের জন্য কষ্টের।
গতকাল ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিত্সা নিয়েছেন বলে আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন। কুড়িগ্রামের চিলখালা মডেল কলেজের মো. ফরহাদ, বরিশালের আল-ইখন দাখিল মাদ্রাসার বজলুর রহমান, কুষ্টিয়ার খোকসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আব্দুর রাজ্জাক, বরিশালের আল ইখওয়াসা দাখিল মাদ্রাসার ফজলুর রহমানের অবস্থা গুরুতর বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন।
গতকাল কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা এম.এ সাঈদ, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক সাইফুল হক, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ ও খালেকুজ্জামান লিপন, ন্যাপের সম্পাদক পার্থ সারথী চক্রবর্তী, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্বাফি রতন ও জলি তালুকদার, ওয়ার্কার্স পাটির্র কেন্দ্রীয় নেতা আকবর খান প্রমুখ।