• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন

উপস্থাপনায় ‘ভুল’, নড়াইলে খালেদা জিয়ার জামিন নাকচ

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বুধবার, ৬ জুন, ২০১৮

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে করা মানহানির মামলায় নড়াইল আদালতে জামিন পাননি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার পক্ষে করা আবেদনটি উপস্থাপনায় ‘ভুল’ হয়েছে জানিয়ে আবেদনটি ফিরিয়ে দিয়েছেন আদালত। নড়াইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গত ৩০ মে করা আবেদনটি মঙ্গলবার নাচক করেন বিচারক আবদুল আহাদ শেখ।
এই মামলাটিতে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। তবে ২৮ মে আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ হয়। সেদিন আবেদনটি নড়াইল আদালতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। জজ কোর্টের আদেশ না হওয়া পর্যন্ত উচ্চ আদালতে যাওয়া ঠিক হয়নি বলে জানান দুই বিচারপতি।
হাইকোর্টের আদেশের দুই দিন পর খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন আবেদন করেন বিএনপির আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তবে আবেদনটি ‘নট মেইনটেন্যাবল বা সমর্থনীয় নয়’ উল্লেখ করে নাচক হয়।
মাসুদ আহমেদ তালুকদার এজলাস থেকে বের হয়ে এসে সাংবাদিকদের বলেন, বিচারক বলেছেন, আমাদের দরখাস্ত আইনসম্মতভাবে হয়নি। এটা বলে উনি আমাদের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইমদাদুল ইসলাম বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আসামিকে শ্যোন অ্যারেস্ট না দেখানোর পরও জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চাওয়ায় এটা নট মেইনটেন্যাবল বলে উল্লেখ করেছেন বিচারক। এই ভুল কার – জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দায় দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীদের।
তিনি বলেন, এটা আসামিপক্ষের আইনজীবীর ভুল। যেভাবে জামিন পাওয়া যাবে, সেভাবে তারা এতদিন আবেদন করেনি। তবে খালেদা জিয়ার পক্ষে আবেদনকারী মাসুদ আহমেদ তালুকদারকে সহায়তা করা নড়াইলের আইনজীবী ইকবাল হোসেন সিকদার বলেন, এটা আমাদের ভুল নয়। শ্যোন অ্যারেস্টের বিষয়টি বাদীপক্ষ দেখবে, আমরা নয়।
নড়াইলের জেলা পরিষদ সদস্য রায়হান ফারুকী ইমাম ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার নামে মানহানির মামলাটি করেন। এর তিন দিন আগে ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে বির্তক আছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি নেত্রী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা চাননি বলেও সেদিন দাবি করেন তিনি। এরপর নড়াইল সদর আমলী আদালতে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।
২০১৬ সালের ২৫ জুলাই খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করা হয়। এতে ২৩ আগস্ট স্বশরীরে আসতে নির্দেশ দেন বিচারক। কিন্তু যাননি বিএনপি নেত্রী। জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। কিন্তু এই পরোয়ানা পুলিশ যেমন তামিল করেনি, তেমনি বিএনপির আইনজীবীরাও মামলাটিতে তেমন গুরুত্ব দেননি। তবে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর এই মামলাটি ছাড়াও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা আরও পাঁচটি মামলা বড় হয়ে উঠে। গত ১৬ মে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি নেত্রীকে আপিল বিভাগ জামিন দিলেও সেই ছয়টি মামলার কারণে তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না।
নড়াইল আদালতে গত ১৬ এপ্রিল খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করা হয়। পরে ৮ মে শুনানির দিন ঠিক হয়। সেদিন জামিন মঞ্জুর বা না-মঞ্জুর কোনো আদেশই হয়নি বলে জানান মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
গত ২৮ মে মামলাটিতে জামিনের বিষয়ে বিচারিক আদালতে শুনানি করে আসতে হাইকোর্টের আদেশের পর ৩০ মে নড়াইলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন মাসুদ। সেদিন ৫ জুন শুনানির দিন ঠিক হয়।
Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page