• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন

পরোয়ানা তামিল গ্রহণের নামে ম্যাজিস্ট্রেট অহেতুক কালক্ষেপণ করেছে: হাইকোর্ট

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১৮

মানহানির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নিষ্পত্তির পরিবর্তে নথিভুক্ত করে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গুরুতর ভুল করেছেন মর্মে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, খালেদা জিয়া অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন।

এই বিষয়টি উল্লেখ করে হাজিরা পরোয়ানাসহ তার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট জামিন শুনানি না করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের জন্য ৫ জুলাই দিন ধার্য করে দেয়। কিন্তু বিদ্যমান তথ্য ও পারিপাশ্বিক অবস্থা দেখে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, পরোয়ানা তামিল প্রতিবেদন গ্রহনের নামে ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তের (খালেদা জিয়া) জামিন আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অহেতুক সময়ক্ষেপন করেছেন। যা বিচারিক প্রক্রিয়ার অপব্যবহারের শামিল। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেন। একইসঙ্গে হাজিরা পরোয়ানাসহ খালেদা জিয়ার করা জামিন আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

১৫ আগষ্ট জন্মদিন পালনের অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নালিশি (মানহানি) মামলা করেন সাংবাদিক নেতা গাজী জহিরুল ইসলাম। এই মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গত দেড় বছরেও ওই পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি পুলিশ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হন খালেদা জিয়া। এরপরই গত ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার হাজিরা পরোয়ানাসহ জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।

গত ১৭ মে ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট তার আদেশে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী অন্য মামলায় জেল হাজতে থাকলে আসামি গ্রেপ্তার দেখানোর দায়িত্ব প্রসিকিউশনের বা বাদি পক্ষের। আসামি পক্ষের এ পর্যায়ে এ ধরনের দরখাস্ত দেওয়ার আইনগত কোন সুযোগ না থাকায় আসামি পক্ষের দায়ের করা দরখাস্ত নথিজাত করা হল। একইসঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের জন্য ৫ জুলাই দিন ধার্য রাখা হলো। জামিন আবেদন নিষ্পত্তি না করে নথিভুক্ত রাখা এবং দীর্ঘ সময় দিয়ে দিন ধার্য করায় হাইকোর্টে জামিন চান খালেদা জিয়া। তার ওই জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণ দিয়ে নিষ্পত্তি করেন হাইকোর্ট।

১৭ মে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেয়া আদেশ পর্যালোচনা করে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, আমাদের বলতে দ্বিধা নেই যে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট পুরো বিষয়টি ভুল পথে পরিচালিত করেছেন। কারন জামিন আবেদনকারী যেখানে অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন সেহেতু নালিশি মামলায় জামিন আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করার কোন দরকার নেই, এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে। কিন্তু এরপরেও জামিন আবেদন নথিভুক্তের আদেশ দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট গুরুতর ভুল করেছেন। গতকাল হাইকোর্টের আদেশের এই অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page