• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৫ অপরাহ্ন

‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণ হবে না’

আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১২ জুন, ২০১৮

২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সংসদে মঙ্গলবার থেকে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথমদিনেই ব্যাংক খাতে লুটপাটের মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন তিনজন সংসদ সদস্য। ব্যাংকের করপোরেট কর আড়াই শতাংশ না কমিয়ে ১ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেন তাদের কেউ কেউ। এর আগে রবিবার ও সোমবার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর দুই দিনের আলোচনায়ও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অবশ্য একজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পয়েন্ট অব অর্ডারে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে কথা বলেছেন।
অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তার উদ্দেশে বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার ব্যাংককে টাকা দেয়া হচ্ছে। একবার ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে, একবার করের ছাড় দেয়া হচ্ছে। একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এভাবে হয়তো ব্যাংক রক্ষা করা যাবে, কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে জায়গায় যাওয়ার লক্ষ্য, তা পূরণ হবে না। ব্যাংক থাকবে, অর্থনীতি কলুষিত হবে। এক মণ দুধে এক ফোঁটা টকই যথেষ্ট। তিনি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর আড়াই শতাংশের জায়গায় ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) এমপি মোহাম্মদ নোমান বলেন, আমরা ছোটবেলায় ডাব খেতাম, রস  খেতাম। তখন বলত চুরি করেছি। আর এখন হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হচ্ছে, অথচ লুট বলা যাবে না। রাষ্ট্র ব্যাংককে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। ব্যাংক কাদের টাকা দিচ্ছে? কেন জবাবদিহি করা হচ্ছে না? জনগণের টাকায় কেন ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে?
তিনি বলেন, লুট করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। জবাবদিহি বা শাস্তি না দিয়ে আবার টাকা দেয়া হয়েছে। এতে আবারও একই অবস্থা হবে। রাস্তাঘাটের দুরবস্থা নিয়ে নোমান বলেন, রাস্তাঘাটের অবস্থা আসলেই  বেহাল। যে কাজ এক বছরে করা যায়নি, তা এক সপ্তাহে করা যাবে না। ব্যাংকের করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাবের সমালোচনা করে জাপার ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, ব্যাংক খাতে যে লুট হয়েছে, নাদির শাহের দিল্লি লুটের সময়ও এত টাকা লুট হয়নি। ব্যাংকের করপোরেট কর আড়াই ভাগ কমানো হয়েছে, কিন্তু অন্য করপোরেট খাতে ৪০ শতাংশই রাখা হয়েছে। যে খাত ভালো করছে, সেখানে কর কমানো হয়নি, যে খাতে লুটপাট হচ্ছে- সেখানে কর কমানো হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দুষ্টু বিড়ালকে কুকি দিলেন, পরদিন দুষ্টু বিড়াল দুধ চাইবে। আর ভালো বিড়ালকে রিওয়ার্ড দিলেন না।
শামীম হায়দার আরও বলেন, এত বড় বাজেট বক্তৃতায় বিচার বিভাগ নিয়ে মাত্র দুটি কথা বলা হয়েছে। এই বাজেট ‘ব্যুরোক্রেটিক’ বাজেট। যখন এ ধরনের বাজেট হয়, তখন বিচার বিভাগের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন এত বেশি বাড়ানো হয়েছে যে এই খাতে ব্যয় বেড়ে গেছে। আর উন্নয়নে বরাদ্দ কমছে।
বাজেটের ওপর আলোচনা শুরু হওয়ার আগে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী পয়েন্ট অব অর্ডারে অর্থমন্ত্রীর পক্ষ নিয়ে বলেন, ব্যাংক খাত সত্যিকার অর্থে যতটা নাজুক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তার চেয়ে বেশি কিছু অযাচিত মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণ এই খাতকে আরও দুর্বল এবং অস্থিতিশীল করছে। অর্থমন্ত্রীর অনেক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। তবে তিনি একজন নীতিমান ও ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তি। তার সঙ্গে ব্যাংক খাতের অনিয়মে জড়িত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা নেই। জাপার সদস্যরা অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন দাবি করে তিনি তাদের মন্তব্য প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ