সারাদেশ | তারিখঃ জুন ৩০, ২০১৮ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 221 বার

তানোর প্রতিনিধি॥
রাজশাহীর তানোরের কোয়েলহাট আদর্শ ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সালিশ বৈঠকে এক স্কুল ছাত্রীর ইজ্জ্বতের মূল্য মাত্র ৪৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করে নুরুল হোসেন নামের এক লম্পটকে ধর্ষণ চেস্টার অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এক জন অধ্যক্ষ হয়েও স্কুল ছাত্রীর ইজ্জ্বতের মূল্য নির্ধারণ করার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বছরের ২৯ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় কোয়েহাট বটড্যাং ব্রীজে এই সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে উক্ত সালিশ বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন পাঁচন্দর ইউপির এক নম্বর ওয়ার্ড সদস্য লফর উদ্দীন, (সাবেক) সদস্য মফিজ উদ্দীন, কলমা ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীন, (সাবেক) সদস্য মুনসুর রহমান প্রমূখ। জানা গেছে, তানোরের পাঁচন্দর ইউপির কোয়েলহাট হঠাৎপাড়া গ্রামের মৃত নমির মন্ডলের পুত্র নুরুল হোসেন বলদিপাড়া গ্রামের জনৈক ব্যক্তির কন্যা ও গঙ্গারামপুর স্কুলের অস্টম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের চেস্টা ও শ্লীলতাহানি করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদি হয়ে লম্পট নুরুল হোসেনকে আসামি করে তানোর থানায় ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি চেস্টার অভিযোগ করেন। অভিযোগের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ প্রভাবশালী মহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অভিযোগটি আমলে না নিয়ে অভিযুক্ত নুরুলকে বাঁচাতে গ্রাম্য সালিশে আপোষ-মিমাংসার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেছে ভিকটিম পরিবার।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান অভিযোগ তুলে নিয়ে গ্রাম্য সালিশে বিষয়টি আপোষ-মিমাংসা করতে বাদিকে বিভিন্ন কৌশলে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করতে থাকেন। একদিকে পুলিশের অজ্ঞাত নিরবতা অন্যদিকে অধ্যক্ষের ভয়ভীতি ও হুমকির মূখে অবশেষে ভিকটিম পরিবার গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে বসতে বাধ্য হয়। চলতি বছরের ২৯ জুন শুক্রবার অধ্যক্ষের সভাপতিত্বে সালিশ বৈঠকে মেধাবী ওই স্কুল ছাত্রীর ইজ্জ্বতের মূল্য মাত্র ৪৫ হাজার টাকা এবং থানা পুলিশ ম্যানেজ করতে ১৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়, তবে এই ১৫ হাজার টাকা উভয় পক্ষকে দিতে বলা হয়েছে। এব্যাপারে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের চেস্টা বা ধর্ষণ আপোষযোগ্য অপরাধ নয়। তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে কোয়েলহাট কলেজ অধ্যক্ষ ও সালিশ বৈঠকের সভাপতি মিজানুর রহমান অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ওই সালিশ বৈঠক করা হয়েছে। তিনি বলেন, সবকিছুই যদি পুলিশ করবে তাহলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে তাদেরও তো কিছু করতে হয়। এব্যাপারে সালিশ বৈঠকের বোর্ড কমিটির সদস্য ও পাঁচন্দর ইউপি সদস্য লফর উদ্দীন বলেন, থানা পুলিশের অনুমতি নিয়ে ওই সালিশ বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে, তবে সালিশ বৈঠকের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন সভাপতি ও অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান। এব্যাপারে প্রবীণ আইনজীবী এ্যাডঃ আব্দুল আহাদ মন্ডল বলেন, এটা মানবাধিকারের স্পস্ট লঙ্ঘন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বিচারকদের (সালিশদার) বিচার হওয়া উচিৎ।
Leave a Reply