এর আগেও দু’বার পরিকল্পনা করেছিল; কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। তৃতীয়বারের পরিকল্পনায় তারা সফল হয়। ওই রাতে বৃষ্টি হওয়ায় ওই সময়টি বেছে নেয়া হয়। হত্যাকাণ্ডে পাঁচজন অংশগ্রহণ করে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জাবানবন্দিতে তারা জানায়, পাঁচজনের মধ্যে একজনকে দরজার বাইরে পাহারায় রাখা হয়। বাকি চারজন রুমে ঢুকে ব্যবসায়ীর সঙ্গে টিভি দেখে। খুন হওয়ার আগে ব্যবসায়ী আবদুল করিম তাদের বেদানা খাওয়ায়। এক সময় টিভির সাউন্ড বাড়িয়ে দিয়ে ব্যবসায়ীকে জাপটে ধরে তারা। আবদুল করিম চিৎকার করার চেষ্টা করলে ঘাতকদের একজন বালিশ দিয়ে মুখ চেপে ধরে। আরেকজন বুকের ওপর উঠে বসে। অন্য দু’জনের একজন পা চেপে ধরে অণ্ডকোষ টেনে ছিঁড়ে ফেলে। মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা টাকার থলে নিয়ে দরজায় তালা ঝুলিয়ে বের হয়ে যায়।
আদালতে আলমগীর ও মঞ্জু জানায়, প্রাথমিকভাবে তারা প্রত্যেকে পাঁচ হাজার করে টাকা নেয়। বাকি টাকা পরে ভাগবাটোয়ারা হবে বলে একমত হয়। রাত ১২টার পর হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলেও তারা জানায়। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বাকি তিন আসামির কথাও স্বীকার করে তারা। নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, স্বাধীনতার পরপরই জন্মস্থান চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর সৈয়দপুর থেকে ঢাকায় চলে আসেন আবদুল করিম। পরিবার নিয়ে থাকতেন রাজধানীর শাহজাহানপুর রেল কলোনির বি ৭/এ/১ বাসায়। ছেলেমেয়ে বড় হলে এ বাসায় জায়গা না হওয়ায় তিনি রেল কলোনির ডরমেটরি ভবনের ৫নং কক্ষে থাকতেন। সেখানে তার ব্যবসা সংক্রান্ত সব টাকা ও মালামাল রাখা হতো। নিহতের ছেলে ফিরোজ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমরা পাঁচ ভাই-বোন সবাই পরিণত বয়সের। আমরা যে বাসায় থাকি সেটি ছোট হওয়ায় বাবা রেল কলোনির ডরমেটরিতে থাকতেন। আমরা কখনও বাবার সিদ্ধান্তের বাইরে যেতাম না। বাবার ছায়ায় এ শহরে বড় হয়েছি। কিন্তু ঘাতকরা আমার বাবাকে হত্যা করে আমাদের অভিভাবকশূন্য করেছে। শাহজাহানপুর থানার ওসি সফিকুল ইসলাম মোল্যা যুগান্তরকে বলেন, দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।