সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা নিয়ে সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়। সেখানে তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে সংস্কারে আর্থিক চাহিদা নিরূপণ করা হয়। তালিকায় শুধু সর্বশেষ বন্যা নয়, এর আগে সিলেটে হয়ে যাওয়া দু’দফা বন্যা, উত্তরাঞ্চলে এ মৌসুমের প্রথম বন্যা এবং গত মে-জুনে অতিবর্ষণে পার্বত্য এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের নামও আছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের (ইইডি) প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা যুগান্তরকে জানান, যেহেতু কয়েক দিনের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে, তাই যেসব প্রতিষ্ঠানের ছোটখাটো সংস্কার আছে সেগুলো আমরা স্থানীয়ভাবে শুরু করে দিয়েছি। থোক বরাদ্দের অর্থ থেকে তার সংস্থান করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ২ হাজার ১১৩টি স্কুল, কলেজ মাদ্রাসার জন্য বেশ টাকা প্রয়োজন। মাঠপর্যায় থেকে পাঠানো কর্মকতাদের হিসাব অনুযায়ী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের পেছনে গড়ে ৩ লাখ টাকা দরকার।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের (ডিডিএম) ৩ আগস্ট পর্যন্ত দেয়া হিসাব অনুযায়ী, সারা দেশে ৪ হাজার ৮২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৮৫টি সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাকিটা আংশিক। তবে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের তালিকায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী মো. হানজালা। এদিকে বন্যায় প্রায় ৩০ হাজার প্রাথমিক স্কুল নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। মঙ্গলবার বিকালে তিনি যুগান্তরকে আরও বলেন, মাঠপর্যায়ে থেকে আমাদের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পাঠাচ্ছেন। তার ওপর নির্ভর করে হিসাব তৈরি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি।
উল্লেখ্য, বন্যায় শিক্ষার একাডেমিক এবং অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। বন্যাকালীন কিছু জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা নেয়া যায়নি। মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল-মাদ্রাসায় অর্ধ-বার্ষিক বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং জুনিয়র স্কুল ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেএসসি-জেডিসি) পরীক্ষার্থীরা। স্কুল বন্ধ থাকায় এসব শিক্ষার্থীর ক্লাস, অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন পরীক্ষা নেয়া যায়নি। একাডেমিক এ ক্ষতিপূরণে অবশ্য শুক্র-শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিনে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সরকারের দায়িত্বশীল দুই মন্ত্রী।
এরমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সোমবার জানান, দুই দফা বন্যায় দেশের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার যে অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে, তা সারিয়ে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে দিতেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শুক্র-শনিবারসহ অন্য ছুটির দিনে বিশেষ ক্লাস নিতে নির্দেশনা ইতিমধ্যে বন্যাগ্রস্ত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা মতো বাড়তি ক্লাস নেয়া হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করা হচ্ছে।