যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে করা অনিবন্ধিত তরুণ অভিবাসীদের সুরক্ষাসংক্রান্ত কর্মসূচি বাতিল করেছে নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
‘ডেফারড অ্যাকশন ফর চিলড্রেন অ্যারাইভাল’ (ডাকা) বা ‘ড্রিমার’ নামে পরিচিত এ প্রকল্প বাতিল করার নির্বাচনী অঙ্গীকারও ছিল ট্রাম্পের।
অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস মঙ্গলবার এ প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা দিলে এর আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে।
মার্কিন অভিবাসন আইন অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসীদের দুই বছর ছাড়ের মেয়াদ শেষে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়ে থাকে।
কিন্তু পাঁচ বছর আগে প্রেসিডেন্ট ওবামা ড্রিমার প্রকল্প চালু করেন। এর আওতায় অনিবন্ধিত তরুণ অভিবাসীরা দুই বছরের মেয়াদ শেষেও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস, পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে আসছিলেন।
আর এ সুযোগ পেয়েছিলেন প্রায় আট লাখ অনিবন্ধিত তরুণ অভিবাসী, যাদের বেশিরভাগই লাতিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন।
মার্কিন অভিবাসনবিরোধী সমালোচকরা ড্রিমার প্রকল্পকে অবৈধ অভিবাসীদের ক্ষমা করার নামান্তর বলে আসছিলেন। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজের নির্বাচনী প্রচারণার সময় ড্রিমার প্রকল্প বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
প্রকল্প বাতিলের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আশা করছেন, তথাকথিত ড্রিমারদের বিষয়ে একটির দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজে পাবে মার্কিন কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, মানুষ তাদের শিশু মনে করলেও আসলে তারা যথেষ্টই বড়। তাদের জন্য আমার ভালোবাসাও রয়েছে। আর আমি আশাবাদী যে, কংগ্রেস তাদের যথাযথই সহায়তার ব্যবস্থা করতে পারবে।
তিনি বলেন, আমি কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এ নিয়ে সঠিক কাজটি করতেও বলেছি। আর সত্যিই আমাদের কোনো উপায় ছিল না। আমি মনে করি, এখন এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি সঠিক সমাধানের দিকেই এগোচ্ছে।
অবশ্য এ প্রকল্পের আওতায় থাকা তরুণদের আগামী ছয় মাস কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তকে ‘নিষ্ঠুর’ ও ‘ভুল’ বলে এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
‘ডাকা’ প্রকল্প বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে কয়েকটি শহরে। নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে থেকে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ। তবে কোথাও কোনো সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে মেক্সিকো ও এল-সালভেদরের সরকার তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভকারীদের দেখা গেছে মেক্সিকোর মার্কিন দূতাবাসের সামনেও।
সূত্র: বিবিসি বাংলা