গত কয়েকদিনে সারা দেশে তুচ্ছ কারণে বেশকিছু খুনের ঘটনা ঘটেছে। এসব দেখে মনে হয় মানুষের জীবন হয়ে পড়েছে মূল্যহীন! মঙ্গলবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে. স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার সন্দেহে ইমন নামে এক তরুণকে বাসায় ডেকে এনে খুন করেছে চট্টগ্রামের এক সন্ত্রাসী। খুন করার পর লাশ নিশ্চিহ্ন করার জন্য নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নেয় ওই সন্ত্রাসী ও তার সঙ্গীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অনেকদিন চেষ্টার পর অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। অপরাধীরা ইমনকে যে পৈশাচিক কায়দায় খুন করেছে এবং খুনের পর যেভাবে লাশ টুকরো টুকরো করে ড্রামে ভরে সিমেন্ট-বালি দিয়ে ঢালাই করে হত্যার চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে, তাতে মনে হয় তারা দীর্ঘদিনের পেশাদার খুনি। সেক্ষেত্রে তারা আরও কী কী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত সেসবও উদঘাটন করা প্রয়োজন।
মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে গত শুক্র ও শনিবার দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। টানা দু’দিন ধরে যেভাবে এ সংঘর্ষ হয়েছে, তা বিস্ময়কর। সংঘর্ষকারীরা কেন এমন হিংস্র আচরণে লিপ্ত হল তার তদন্ত হওয়া জরুরি। হামলাকারীদের আচরণে মনে হয়, নেপথ্যের কোনো শক্তির ইন্ধনেই তারা বেপরোয়া আচরণ করেছে। এ ঘটনার নেপথ্যে অন্য কারও ইন্ধন থাকলে ইন্ধনদাতাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
গাইবান্ধায় প্রথম শ্রেণীর একটি শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। লক্ষ করা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে হত্যা-ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে। এসব ঘটনা থেকেই স্পষ্ট সমাজে কত বিকৃত মানসিকতার মানুষ রয়েছে। যারা এমন ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা জানি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি অপরাধীদের উৎসাহিত করে। কাজেই গুরুতর অপরাধীরা যাতে কোনোভাবেই পার পেয়ে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর না হলে অনেক অপরাধী ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে। জনগণের সার্বিক নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অপরাধী ও তাদের আশ্রয়দাতাদের শনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সফল না হলে দেশে আইনের শাসনের কাক্সিক্ষত উন্নতি ঘটবে না।

Share Button