দেখতে দেখতে বছর ঘুরে গেল। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরির সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ নিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে চালানো ওই অভিযানে সেদিন অন্যতম নেতা ছিলেন মেজর ‘মাইক ট্যাঙ্গো’। প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ না করে সেনার সাংকেতিক নাম ব্যবহার করেই তার অভিজ্ঞতার কথা লেখা হয়েছে সদ্য প্রকাশিত এক বইয়ে।
সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের বিশদ বিবরণ রয়েছে শিব আরুর এবং রাহুল সিংয়ের লেখা ‘ইন্ডিয়াস মোস্ট ফেয়ারলেস: ট্রু স্টোরি অব মডার্ন মিলিটারি হিরোস’ নামের বইটিতে। সেই অভিযানের ১৪টি আলাদা আলাদা ঘটনা বর্ণনা করে তুলে ধরা হয়েছে ওই বইটিতে। খবর পিটিআইয়ের।
বইতে মেজর ‘মাইক ট্যাঙ্গো’ জানান, রাতের অন্ধকারে ওই অভিযান থেকে ফেরার সময় পদে পদে বাধা দিয়েছিল পাকিস্তানি সেনা। জঙ্গিদের যে চারটি লঞ্চপ্যাড নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেগুলো পাক গুপ্তচর বাহিনী আইএসআই পরিচালনা করে। আর সেগুলোর রক্ষার দায়িত্বেও ছিলেন খোদ পাক সেনারা। ফলে পাক বাহিনী যখন টের পায় শত্রুপক্ষ হামলা চালিয়ে ফিরে যাচ্ছে, তখন তারা পাল্টা হামলা চালায়। ওই এলাকায় পাক বাহিনীর সবক’টি সীমান্ত চৌকি থেকে ভয়াবহ গোলা বর্ষণ শুরু হয়। সীমান্ত চৌকিগুলোতে যত রকমের অস্ত্র ছিল সব রকমের অস্ত্র ব্যবহার করে পাক বাহিনী হামলা চালায় বলে ‘মাইক ট্যাঙ্গো’কে উদ্ধৃত করে বইটিতে জানানো হয়েছে।
মেজর ট্যাঙ্গোর ভাষ্য, ‘আমাদের কাজ ছিল, হামলাস্থলে পৌঁছে শত্রুপক্ষের গতিবিধি নজর রাখা। আর সামনে যাকে পাব, তাকে মেরে ফেলা। কিন্তু মূল সমস্যা হয় ফেরার সময়। ওরা (পাক সেনা) যেন ঘুমের ঘোর কাটিয়ে উঠে পড়েছিল। আমরা যখন ফিরছি, গোটা বাহিনীর দিকে ধেয়ে আসে গুলির বৃষ্টি। অনেক সময় মাটিতে শুয়ে পড়তে হচ্ছিল আমাদের।’
ট্যাঙ্গো আরও জানান, এক এক সময় পেছন দিক থেকে ছুটে আসা গুলি একেবারে কান ঘেঁষে বেরিয়ে যাচ্ছিল অর্থাৎ কানের পাশ দিয়ে গুলি বেরিয়ে যাওয়ার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। তবে আলো ফোটার আগেই ভারতের মাটিতে ঢুকে পড়তে সক্ষম হন তারা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর যে চারটি লঞ্চপ্যাডকে টার্গেট করা হয়েছিল, সেগুলোর বিষয়ে বিশদে খোঁজখবর নেয়া হয়েছিল কাশ্মীরের দুই বাসিন্দা এবং দুই জইশ জঙ্গির কাছ থেকে।