ঋতুস্রাবকে অশুচি নয় বলে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হুমকির মুখে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে মনোবিদের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হয়েছে ভারতের বিখ্যাত লেখিকা কাজল ওঝা বৈদ্য।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাটের বাসিন্দা এ লেখিকা ৫৫টির বেশি উপন্যাস, কাব্যগ্রন্থ এবং প্রবন্ধ সঙ্কলনপ্রণেতা।
বিবিসির এক অনুষ্ঠানে তিনি মেয়েদের ঋতুস্রাবের সময় বিভিন্ন উপাসনালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে কথা বলেন।
সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে তার ওই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ট্রলের (অনলাইনে আক্রমণ) শিকার হন। এ ছাড়া ফোনেও হুমকি দেয়া হয় তাকে।
এ অবস্থায় লেখক কাজল পুলিশে অভিযোগ করেন। কিন্তু এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি এবং তাকে হুমকি দিয়ে ফোন করাও বন্ধ হয়নি।
ফলে ক্রমাগত হুমকির মুখে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। মানসিক ভীতি কাটাতে তাকে এরই মধ্যে মনোরোগ চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হতে হয়েছে।
জানা গেছে, বিবিসির ‘লেটস টক পিরিয়ড’ অনুষ্ঠানে কাজল বলেন, ঋতুস্রাবের সময় নারীদের বিভিন্ন উপাসনালয়ে যাওয়ার ওপর যে নিষেধজ্ঞা রয়েছে তা অযৌক্তিক। কারণ শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার কারণে কোনো মানুষ অশুচি হয়ে যায় না।
তিনি বলেন, ঋতুস্রাবের সময় যে যে নিষেধাজ্ঞা সাধারণভাবে একজন ভারতীয় নারীকে মেনে চলতে হয়, সেই নিষেধাজ্ঞাগুলো রদ করে দেয়া উচিত। যাতে নারীরা যে কোনো সময়েই উপাসনালয়ে যেতে পারেন।
একপর্যায়ে লেখক কাজল বলেন, ঋতুস্রাবের সময়ও তিনি মন্দিরে গিয়েছিলেন।
এরপর টুইটারে কাজলকে হিন্দুধর্মের শত্রু বলে উল্লেখ করা হয়। তার ফেসবুক পেজেও নানা বিরূপ মন্তব্য করা হয়।
এরপর কট্টরপন্থীরা কাজলকে সরাসরি ফোন করে জ্ঞানপাপী বলে আখ্যা দেয়া হয়। বলা হয়, তিনি বিবিসিতে হিন্দুধর্মকে অপমান করেছেন। এর জন্য তাকে চরম মূল্য দিতে হবে।
একপর্যায় বারবার ফোন করে কাজলকে ও তার একমাত্র ছেলে তথাগতকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেয় হিন্দুত্ববাদীরা।
You cannot copy content of this page