• সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৫ অপরাহ্ন

সাতক্ষীরায় কলেজ অধ্যক্ষের উপর হামলা

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি॥
আহত অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান জানান, দুপুরে কলেজ থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে হঠাৎ করেই ক্যাম্পাসের পাশে তার উপর সুশান্ত মন্ডল, নির্মল বৈরাগী, রুহুল আমিন, আবু সুফিয়ান, আব্দুল কাদের, আব্দুল আহাদ, জাহাঙ্গীর নামের ১০-১২ জন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়েছে। হামলাকারীরা সবাই ওই কলেজের শিক্ষক। এ ব্যাপারে কলেজের দর্শন বিভাগের  প্রভাষক সুশান্ত মন্ডল জানান, অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজের ডিগ্রি সেকশনে তারা ২২জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন। যাদের প্রত্যেকেই ১৫-১৬ বছর ধরে চাকরি করছে। প্রত্যেকের কাছ থেকেই চাকরিতে যোগদানের সময় অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান ২-৩ লক্ষ করে টাকা নিয়েছেন। এরপর এমপিওভুক্তির জন্য ফের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০ থেকে ৬০ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে। টাকা নেওয়া হয়েছে ডিগ্রি সেকশনের স্বীকৃতির নাম করেও। কিন্তু এতোদিনেও ডিগ্রি সেকশন স্বীকৃতি পায়নি। হঠাৎ করে অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান ডিগ্রি সেকশনের খাতা-পত্র উধাও করে দেন। কলেজের কোথাও ২২জন শিক্ষক-কর্মচারীর নাম পর্যন্ত নেই। ১৫ বছরের হাজিরা খাতা তো দূরের কথা। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামানের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডিগ্রি সেকশনের শিক্ষক-কর্মচারীরা তার উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়। সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহীদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।প্রসঙ্গত, শুধু অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজ নয়, অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে শিক্ষার্থীহীন ১৮টি কলেজ গড়ে তুলেছেন। আর শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির নামে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন। পরে বিষয়টি জানা জানি হলে সাতক্ষীরায় তিনি শিক্ষাদস্যু আক্তার নামে আলোচিত হয়ে ওঠেন। তার ফাঁদে পদে সর্বশান্ত হয়েছে শতাধিক চাকরি প্রার্থী। অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে একাধিক জাল-জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তধীন রয়েছে। গোটা শিক্ষা বিভাগ তার জালজালিয়াতির বিষয়টি জন্যে। আর অবৈধ এসব অর্থ দিয়ে তিনি সাতক্ষীরা শহরের আমতলা মোড়ে গড়ে তুলেছেন বিলাশ বহুল ভবন। জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে কিনেছেন একাধিক জমি। করেছেন এভি এস নামের ক্লিনিক। তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে আজ বহু যুবক তার কর্মজীবন নষ্ট করেছেন। অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান বিএনপির আমলে অত্যন্ত প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ছিলেন। তালা-কলারোয়া আসনে বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচন করার জন্য তিনি বিএনপি সরকার আমলে চেষ্টা করেছিলেন। বর্তমানে বিএনপির সক্রিয় নেতা হয়েও তিনি কতিপয় আওয়ামী লীগের নেতার ছত্রছায়ায় বহাল তবিয়তে কলেজ পরিচালনা করে আসছেন। তিনি কোন মানুষকে মানুষ মনে করেন না। বিপদে পড়লে অত্যন্ত সুকৌশলে তিনি কতিপয় ওই আওয়ামীলীগ নেতাদের সহযোগিতায় পার পেয়ে যান। বর্তমানে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। তার ওই সব কলেজে শিক্ষক -কর্মচারী নিয়োগের নাম করে তিনি অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ