• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন

যে জেলেরা ইলিশ ধরে

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

সম্প্রতি জিআই বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে ইলিশের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। সব জায়গায় যখন ইলিশের উৎপাদন কমছে তখন কেবল বাংলাদেশেই ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। এটি আনন্দের কথা। তবে যে জেলেরা এই ইলিশ মাছ ধরে, তারা কেমন আছে?
বেশিরভাগ সময়ই জেলেরা মাছ ধরা অবস্থায়ই ঝড় শুরু হয় সাগরে। হারিয়ে যায় অনেক জেলে। ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে কতজনের পরিবারের খোঁজ আমরা নিতে পারি? জলদস্যুদের হাতে নিহত জেলে পরিবারগুলো কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করে আমরা কি তা জানি? দাদন ব্যবসায়ীদের কারণে প্রতিটি মাছের দামের যে অংশটুকু একজন জেলে পাচ্ছে, তা আমরা যারা হাজার টাকা কেজিতে ইলিশ কিনছি তার একটি নির্দিষ্ট বড় অংশ, নাকি সামান্য ক’টা পয়সা? হ্যা, ইলিশ ধরা জেলেরা এমন কষ্টেই আছে বা থাকে। দাদনের চাপে, সুদের চাপে এবং ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকার সময়ে চরম অভাব নিয়ে বেঁচে থাকে এই জেলেরা। তারা যখন ইলিশ ধরে নিয়ে আসে তখন তা পাতে ওঠে আমাদের খাবার টেবিলে।
ইলিশ এখন সম্পূর্ণই আমাদের- তাই জেলে পরিবার, জেলেদের সুখ-দুঃখ এসবও আমাদের। ইলিশকে ঘিরে পরিকল্পনা আরও বাড়াতে হবে। ইলশ ধরা নিষিদ্ধের সময়ে জেলেদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারলে জাটকা ধরা বন্ধ করা সম্ভব হবে। যে জেলেরা হারিয়ে যাচ্ছে বা নিখোঁজ হচ্ছে, তাদের একটি তালিকা করে পরিবারকে আরও বেশি সহায়তা দেয়া প্রয়োজন। আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা দিতে পারলে জেলেদের দুঃখ অনেকটাই দূর হবে বলে মনে করি।
জেলেদের নিরাপত্তায় কাজ জোরদার করতে হবে। ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময়ে তাদের বাঁচার জন্য যথাযথ ঋণ দিতে হবে এবং অবশ্যই প্রত্যন্ত অঞ্চলের জেলেদের দাদনের হাত থেকে বের করে আনতে হবে। ইলিশ আমাদের জাতীয় স¤পদ। এই সম্পদ ঘিরে যারা জীবিকা নির্বাহ করে তারাও আমাদের স¤পদ। একটি স¤পদ তখনই বেশি মূল্যবান হয় যখন সেটার সঠিক বিপণন হয়। বিশ্বব্যপী বাংলাদেশের ইলিশের যে সুনাম রয়েছে, সেদিকে লক্ষ রেখে রফতানি যেমন করতে হবে, তেমনি আমরা বাংলাদেশিরা পর্যাপ্ত ইলিশ পাচ্ছি কিনা সেদিকেও সঠিকভাবে দৃষ্টিপাত করতে হবে।
ইলিশ যেন শুধু টাকাওয়ালা মানুষের পাতের খাবার না হয়। ইলিশ হোক জেলেদের মুখের হাসিরও কারণ। ইলিশ একটি অসহায় পরিবারের জন্য তখনই সহায় হবে, যখন আমরা সঠিকভাবে ইলিশের বিপণন করতে পারব। আশা করি সংশ্লিষ্ট সবাই এসব বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগী হবেন।
সাঈদ চৌধুরী : সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, শ্রীপুর, গাজীপুর

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page