• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৬ অপরাহ্ন

আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের আশা ক্ষীণ ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি অব রাখাইন এডভাইজরি ১৫ সদস্যের নতুন কমিটি

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

অবশেষে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে মিয়ানমার। প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে এ বিষয়ে কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। এ কমিটি গঠন করা হলেও আশার আলো কম। কারণ, ওই কমিটির মূল সুপারিশের প্রতি কোনো ভ্রুক্ষপ করবে না নতুন কমিটির সদস্যরা। তারা সেই ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের অধীনেই প্রক্রিয়া চালাবে। রিপোর্টে বলা হয়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিরাপত্তা ও জীবন জীবিকার মান উন্নত করতে ওই কমিশন যেসব সুপারিশ উত্থাপন করেছিল তা বাস্তবায়নই হবে সরকার গঠিত কমিটির কাজ। খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে গত মঙ্গলবার। তাতে বলা হয়েছে, ‘ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি অব রাখাইন এডভাইজরি কমিটি’ নামে ১৫ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। নাম দেখেই বোঝা যায় তারা জাতিসংঘ কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে। তবে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা এলাকাগুলোতে এই কমিটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সম্পর্কের বিষয়ে কাজ করবে। পাশাপাশি তারা জাতিগত লোকজনের বসবাস যেসব গ্রামে সেখানে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার কাজ করবে। এতে আরো বলা হয়, এই কমিশন রোহিঙ্গাদেরকে দেশের নাগরিকত্ব আইনের অধীনে নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়টি দ্রুত গতিতে যাচাই বাছাই করবে। কিন্তু এতে স্পষ্ট করে বলা হয় নি, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে, যেমনটা সুপারিশ করেছে কফি আনান কমিশন। ওই আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে কমিশন। সে বিষয়েও কোনো কথা নেই বিবৃতিতে, উল্টো যেটা আছে তা হলো- ওই আইনের অধীনেই নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এ আইনের অধীনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। কারণ, সেখানকার নাগরিক হতে হলে সবার আগে মিয়ানমারের সরকারি ভাষায় কথা বলা জানতে হবে, প্রমাণ দেখাতে হবে স্বাধীনতার আগে তাদের পূর্বপুরুষদের বসবাস ছিল মিয়ানমারে। এসব প্রমাণ সংগ্রহ করা রোহিঙ্গাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে ‘যে গুঁড়ো সেই বালি’ অবস্থা দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন এর আগে রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের পর তদন্ত করে। এরপর গত মাসে ওই কমিশন ৬৩ পৃষ্ঠার রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়। বলা হয়, রোহিঙ্গারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়ে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের ওপর দীর্ঘ সংঘাত, রাষ্ট্রহীনতা ও বৈষম্য তাদেরকে আরো বিপন্ন করে তুলেছে। এতে বরা হয়েছে, বিশ্বে রাষ্ট্রহীন যত মানুষ আছেন তাদের শতকরা প্রায় ১০ ভাগের বসবাস মিয়ানমারে। রাষ্ট্রহীন একটি একক গোষ্ঠী হিসেবে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কফি আনান কমিশন ওই রিপোর্ট প্রকাশ করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ২৫ আগস্ট রাখাইনে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়, যার সূত্র ধরে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, রাখাইনে সঙ্কট তিনমাত্রিক- উন্নয়ন, মানবাধিকার ও নিরাপত্তা। সংখ্যাগরিষ্ঠ আরাকান বৌদ্ধ ও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উল্লেখ করে ওই রিপোর্টে বলা হয়, যদি এসব চ্যালেঞ্জ অবিলম্বে মোকাবিলা করা না হয় তাহলে দু’গ্রুপের মধ্যেই আরো উগ্রপন্থা বিস্তারের মতো বিপদ রয়েছে। এপি।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page