বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেক দেশে চলমান বন্যায় অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়াবে। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা ধরে)। লন্ডনভিত্তিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সংস্থা এওএনের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেনে বলা হয়েছে, জুনের মাঝামাঝি থেকে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে শুরু হওয়া প্রবল বন্যায় চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপালে ব্যাপক ক্ষতি ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে অবকাঠামো ও কৃষি খাতের। এ বন্যায় চীন ও জাপানে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বেশি আর্থিক ক্ষতি নিরূপণ করেছে দেশ দুটির কর্তৃপক্ষ। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালে এ ক্ষতির পরিমাণ কয়েকশ’ মিলিয়ন ডলার। থাইল্যান্ডে ক্ষতির পরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
এশিয়ার দক্ষিণাঞ্চল এ মহাদেশের সবচেয়ে বেশি বর্ষণমুখর এলাকা হিসেবে পরিচিত। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতও হয় এখানেই, যার পরিমাণ বছরে গড়ে অন্তত ১ হাজার মিলিমিটার। বৃষ্টিপাত বাড়লে ভারত, বাংলাদেশ ও চীনের কমপক্ষে ১৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। ২০১২ সালের এক গবেষণায় এ তথ্য মিলেছে। অপর্যাপ্ত নর্দমাব্যবস্থা, অদূরদর্শী পরিকল্পনা এবং নগরাঞ্চলের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে এ সমস্যা প্রকট হয়েছে। গ্রামীণ আবাস ছেড়ে লোকজন দলে দলে শহরে বসতি গাড়লেও তাদের স্থান সংকুলানের পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা সেখানে গড়ে ওঠেনি।
১৯৫০ থেকে এ পর্যন্ত বন্যাজনিত কারণে মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় চীন, ভারত ও বাংলাদেশে। বেলজিয়ামের লুভাঁ ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমার্জেন্সি ইভেন্টস ডেটাবেস অনুযায়ী এ তিন দেশে ১৯৫০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বন্যায় ২২ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী এশিয়া অঞ্চলে আবহাওয়া ও জলবায়ু বিপর্যয়ের ঘটনাগুলোয় বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।