ব্যতিক্রমী আয়োজন আর সাবলীল উপস্থাপনা দিয়ে রাতারাতি দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়ে গেছে বিটিভির ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘পরিবর্তন’। অনুষ্ঠানটি সারা বছর ব্যতিক্রমী আয়োজন নিয়ে হাজির হলেও ঈদের জন্য নির্মিত পরিবর্তনে থাকে আরও বেশি কিছু। তার ধারাবাহিকতা ছিল এবারের ঈদুল আজহাতেও। ঈদের বিশেষ পরিবর্তনের জন্য একসঙ্গে একটি গান গেয়েছেন সঙ্গীতাঙ্গনের ৬ জন উত্তরসূরি। এরা হলেন সাবিনা ইয়াসমিন, আলাউদ্দিন আলী, বশির আহমেদ, আবদুল আলীম, প্রবাল চৌধুরী এবং ইয়াকুব আলী খানের ছয় সন্তান যথাক্রমে- বাঁধন, আলীফ আলাউদ্দিন, হুমায়রা বশির, নূরজাহান আলীম, রঞ্জন চৌধুরী এবং ইউসুফ আহমেদ খান। তাদের গাওয়া গানটি বেশ প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়াও মেহজাবিন ও ভাবনার নৃত্য মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। পাশাপাশি নিয়মিত সব পর্বেই ছিল ভিন্নতা। মোট কথা, আনজাম মাসুদের পরিকল্পনা, গ্রন্থনা, উপস্থাপনা ও নির্দেশনায় এবারের ঈদের পরিবর্তন দর্শকদের কাছে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিটিভিতে প্রচার হয়েছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘আনন্দমেলা’। এবারের আয়োজনে ছিল বেশ কিছু গানের চমক, তারকাদের নৃত্যপরিবেশন এবং সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মজার কয়েকটি স্কিড। বিশেষ করে চিত্রনায়ক রিয়াজ ও শাওনের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় মুগ্ধ হয়েছেন সবাই। এবারের পর্বে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের খ্যাতিমান যন্ত্রশিল্পীদের অংশগ্রহণে তৈরি দুটি গান ছিল। এর একটি গেয়েছেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হলেও এবার তিনি গেয়েছেন আঞ্জুমান আরা বেগমের গাওয়া ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’ গানটি। অন্য গানটি সামিনা চৌধুরীর গাওয়া শিল্পী মাহমুদউন নবীর ‘তুমি যে আমার কবিতা’। এ গানের সঙ্গে চমৎকার একটি পারফর্মেন্সে অংশ নিয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। উপস্থাপনার পাশাপাশি শাওন নিজে গেয়েছে আমার আছে চলচ্চিত্রের ‘আমার আছে জল’ গানটি। সদ্যপ্রয়াত সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব লাকী আখন্দের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার সুর করা ও হ্যাপি আখন্দের ‘কে বাঁশি বাজায়রে’ গানটি গেয়ে বেশ প্রসংশিত হয়েছেন ফাহমিদা নবী । গানটি নতুন করে সঙ্গীতায়োজন করেছেন বাপ্পা মজুমদার। এছাড়া এমএস রানার লেখা ও আইয়ুব বাচ্চুর সুরে আইয়ুব বাচ্চু, বালাম, কনা ও কোনালের গাওয়া আনন্দমেলার টাইটেল গানটি নতুন করে উপস্থাপন করা হয়েছে এবারের অনুষ্ঠানে। এবারই প্রথম আনন্দমেলার জন্য একটি চমৎকার নৃত্যপরিবেশন করেছেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। এছাড়া লিখনের কোরিওগ্রাফিতে। বিশেষ নৃত্যপরিবেশনায় অংশ নিয়েছেন লায়লা হাসান, মুনমুন আহমেদ, নাদিয়া ও লিখন বেশ ভালো লেগেছে। সব মিলিয়ে এবারের আনন্দমেলা ভালো ছিল।
উন্নয়ন সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের পরিকল্পনা, উপস্থাপনা ও পরিচালনায় ঈদে টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘কৃষকের ঈদ আনন্দ’। বরাবরের মতো এবারও চ্যানেল আইতে প্রচার হয়েছে অনুষ্ঠানটি। ভিন্নধারার এ আয়োজনটি প্রশংসাও কুড়িয়েছে সবার। প্রচার হওয়া ঈদের এ অনুষ্ঠানটিতে কৃষকের খেলাধুলা অংশটি এবার ধারণ করা হয়েছিল ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ঔটি গ্রামে কংশ নদীর পাড়ে। পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী ময়মনসিংহের মানুষের অর্থনীতির মূল ভিত্তিই কৃষি। প্রাচীনকাল থেকেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এ অঞ্চল। ধান, পাট, সরিষা, বেগুনের পাশাপাশি মাছ চাষেও বিপ্লব এনেছে এখানকার কৃষক। এই জেলার কলসিন্দুরের মেয়েরা সাহস আর দৃঢ় মনোবল দিয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে বিশ্ব প্রাঙ্গণে। এছাড়া এই ময়মনসিংহেই রয়েছে ময়মনসিংহ গীতিকার অমর কীর্তি। কবি চন্দ্রাবতীর জন্মস্থানও এখানে। যা অনুষ্ঠানটিতে তুলে ধরা হয়েছে দারুণভাবে। কৃষকের আনন্দ অনুষ্ঠানে আনন্দের একটি নির্দিষ্ট থিম থাকে। এবার কৃষি ঐতিহ্যের আরেক কীর্তিময়ী নারী জ্যোতিষী ‘খনা’কে থিম করা হয়েছিল। কৃষকের অংশগ্রহণে বৈচিত্র্যময় আটটি খেলা ছিল এবার। মাটির মানুষের মজার সেই খেলা মাতিয়েছে সবাইকেই।