খুলনার খালিশপুর থানার ১১ পুলিশ ও আনসার কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত চোখ উৎপাটনের মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রবিবার খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আমলী আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম এ নির্দেশ দেন। আগামী ১৮ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর নগরীর খালিশপুর নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনির মো. জাকির হোসেনের স্ত্রী রেনু বেগম বাদী হয়ে খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় দাবীকৃত দেড় লাখ টাকা না পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা যোগসাজশে তার ছেলে মো. শাহজালালের দু’টি চোখ উৎপাটন করে বলে অভিযোগ করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মোমিনুল ইসলাম জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। আদেশে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্যদিয়ে মামলার কার্যক্রম শুরু হলো।
আদালতে বাদীপক্ষে আইন ও শালিস কেন্দ্রের প্যানেল ল’ ইয়ার আব্দুর রশীদ ও খুলনার অ্যাডভোকেট মিনা মিজানুর রহমান অংশ নেন।
মামলার আসামিরা হলেন, খালিশপুর থানার ওসি নাসিম খান, এসআই রাসেল, এসআই তাপস রায়, এসআই মোরসেলিম মোল্লা, এসআই মিজান, এসআই মামুন, এসআই নূর ইসলাম ও এএসআই সৈয়দ সাহেব আলী, আনসার সদস্য (সিপাই) আফসার আলী, আনসার ল্যান্স নায়েক আবুল হোসেন, আনসার নায়েক রেজাউল এবং অপর দু’জন খালিশপুর পুরাতন যশোর রোড এলাকার সুমা আক্তার ও শিরোমনি বাদামতলা এলাকার লুৎফুর হাওলাদারের ছেলে রাসেল।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুলাই মো. শাহজালাল স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে পিরোজপুরের কাউখালি উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের বাড়ি থেকে নগরীর নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনির শ্বশুর বাড়িতে আসে। ওইদিন রাত ৮টায় শাহ জালাল তার শিশু কন্যার দুধ কেনার জন্য বাসার পার্শ্ববর্তী দোকানে যায়। এ সময় খালিশপুর থানা পুলিশ তাকে আটক করে দেড় লাখ টাকা দাবি করে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তারা শাহজালালকে বিশ্ব রোডের (খুলনা বাইপাস সড়ক) নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তার হাত-পা চেপে ধরে এবং মুখে গামছা ঢুকিয়ে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে দু’টি চোখ উপড়ে ফেলে বলে এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন। বর্তমানে তার দু’টি চোখই অন্ধ।
প্রসঙ্গত উক্ত ঘটনায় ‘শাহজালালের চোখ গেল কোথায়’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদ প্রকাশের পর খুলনাসহ সারাদেশে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।