• সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন

চালের পাইকারি দাম কমলেও প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে এক হাজার টাকায় ১ কেজি ইলিশ

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

চালের বাজার নিয়ে জল ঘোলা হওয়ায় মিল মালিকদের চালের দাম কমানোর আশ্বাস ও অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর ঢাকার পাইকারি বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে।

পাইকারি বাজারে কেজিতে দাম তিন-চার টাকা কমলেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব খুবই কম। তবে দু-এক দিনের মধ্যে খুচরা বাজারে দাম আরও কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বাড়িয়ে এখন দু-তিন টাকা কমানোর বিষয়কে ভালোভাবে দেখছেন না ক্রেতারা।

তবে কিছু দোকানে দাম বেশি চাওয়ার জবাবে বিক্রেতারা বলছেন, কম দামে এখনও চাল পাননি তারা। কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা মেসার্স মতলব ট্রেডার্সের কর্ণধার এমএ রাইয়ান জগল বলেন, স্বর্ণা চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২২৫০ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ২৭০০-২৭৫০, ভালো মানের মিনিকেট ৩০০০-৩১০০ এবং নাজির শাইল বিক্রি হচ্ছে ৩২০০-৩২৫০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, মোকাম থেকে চালের সরবরাহ বাড়লে চালের দাম আরও কমবে।

সরবরাহ ঠিক থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চালের দাম ১০-১৫ টাকা কমবে বলে আশা করা যায়। মঙ্গলবার চাল ব্যবসায়ী ও সরকারের মধ্যে বৈঠকে ব্যবসায়ীরা দাম কমানোর আশ্বাস দেন। এরপরও শুক্রবার পর্যন্ত খুচরা বাজারে চালের দাম তেমন কমতে দেখা যায়নি।

কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি মোটা স্বর্ণা চাল ৪৫-৪৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হয়। তবে অন্য বাজারে মোটা চাল ৪৮ টাকা দরেও বিক্রি করতে দেখা যায়। আটাশ চাল ৫০-৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাসমতি চাল ৬৫-৬৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছিল ৭০-৭২ টাকা। নাজিরশাইল ৬০-৬২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা বুধবার পর্যন্ত ৬৫-৬৮ টাকা বিক্রি হয়।

মালিবাগ ও শান্তিনগর বাজারে মিনিকেট চাল ৬৪ টাকা, গুটি স্বর্ণা ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং নাজিরশাইল ৭৫-৭৬ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। হাতিরপুল কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, মোটা চাল বিআর-২৮ কেজিপ্রতি ৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া গুটি ও স্বর্ণা কেজিপ্রতি ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এক নম্বর মিনিকেট ও নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা। সাধারণ মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৬২-৬৫ টাকা।
এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের তুলনায় শুক্রবার ইলিশ মাছের দাম কম ছিল।

সরবরাহও ছিল প্রচুর। এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ বিক্রি হয়েছে এক হাজার টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা। ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭শ’ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯শ’ টাকা। ৬শ’-৭শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৬শ’ টাকা।

৫শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকা, যা আগে ছিল সাড়ে ৫০০-৬০০ টাকা। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী হাসমত আলী জানান, সামনেই ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে তাই সবাই এখন যে যা পারে ইলিশ ধরছে ব্যবসা করে নিচ্ছে। সরবরাহ ভালো তাই দামও নাগালের মধ্যে। আর কয়েক দিন পরেই হয়তো একটু ইলিশ সংকট পড়তে পারে।

এ ছাড়া তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ, কই, নলা, রুই-কাতলা, চিংড়ি ও সরপুঁটিসহ সব ধরনের মাছ সহনীয় দামেই বিক্রি হয়েছে।

বাজারভেদে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৫০০-৫২০ টাকা কেজি। খাসির মাংস কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৭৫০-৮০০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৮০-২০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ টাকা। ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ১৩০-১৪০ টাকা।

অন্যদিকে বাজারভেদে আলু বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকা কেজি, টমেটো ১০০-১২০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, কচুমুখী ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, ধনেপাতা ১০০ টাকা, সিম ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৫০-৫৫ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, শসা ৪০ টাকা কেজি।

দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজি, আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০-৪২ টাকা। পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের মতো স্থিতিশীল রয়েছে। রসুন আমদানি ও দেশি দুটোই বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজিতে এবং আদা বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি দরে। তবে বাজারভেদে দাম কিছুটা কম-বেশি রয়েছে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ