যতই দিন যাচ্ছে ইউক্রেন-রাশিয়ার সংঘাত আরও তীব্র হচ্ছে। ইউক্রেনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তীব্র লড়াই চলছে। বেশ কিছু এলাকায় কিয়েভ জয়ী হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে রুশ বাহিনীর দাবি, তারা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে রুখে দিয়েছে।
একই সঙ্গে তারা আরও বলছে, ইউক্রেনের তিনটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। অপরদিকে সম্মুখ যুদ্ধে বিশেষ করে বাখমুতের জন্য রোববারের (৩০ জুলাই) দিনটিকে একটি সুন্দর ও শক্তিশালী দিন হিসেবে উল্লেখ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গত মে মাসে বাখমুত দখল করে নেয় রাশিয়া। ইউক্রেনীয় বাহিনী বলছে, তীব্র লড়াইয়ের মাধ্যমে তারা ওই অঞ্চল মুক্ত করতে পেরেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধ এবার রাশিয়ার দিকে যাচ্ছে। মস্কোতে এক ড্রোন হামলার পর জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যুদ্ধ এখন তাদের দিকেই ফেরত যাচ্ছে।
দুই দেশের চলমান এই যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়ার সীমানার ভেতরে আক্রমণ হওয়াকে স্বাভাবিক, অবশ্যম্ভাবী এবং সম্পূর্ণ ন্যায্য বলে উল্লেখ করেছেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার তিনটি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’টি ড্রোন অনাবাসিক ভবনের ভেতরে পড়েছে।
ইউক্রেন সরাসরি ড্রোন হামলার কথা স্বীকার না করলেও জেলেনস্কির মন্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, ইউক্রেন এবার রাশিয়ায় পাল্টা হামলার জন্য প্রস্তুত। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানা মালিয়ার বলেন, রুশ বাহিনী আমাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু উত্তর-পূর্বাঞ্চল আমরা দখল করে নিয়েছি।
তিনি জাতীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, রাশিয়ার মূল কাজ আমাদের বাহিনীকে বাখমুত থেকে সরিয়ে দেওয়া। কিন্তু সেখানে আমরা আক্রমণ চালিয়ে সফল হয়েছি। তিনি বলেন, তারা চলতি সপ্তাহে তীব্র আক্রমণ চালিয়েছে। কিন্তু আমাদের সৈন্যরা আক্রমণ প্রতিহত করেছে।
ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ৫০০ কিলোমিটারের (৩১০ মাইল) মধ্যে অবস্থান মস্কো শহরের। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়া সেনা অভিযান শুরু করার পর থেকে মস্কোতে হামলা হওয়ার মতো ঘটনা খুব কমই ঘটেছে।
তবে গত কয়েকমাসে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে তারা মস্কোতে একাধিক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল মে মাসে ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার অভিযোগ। মস্কো শহরের কেন্দ্রে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে লক্ষ্য করে দুটি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ তোলে রুশ কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেন অবশ্য প্রেসিডেন্ট পুতিনকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাবি করেন যে, ক্রিমিয়াতেও ইউক্রেন ড্রোন হামলা চালিয়েছে।