এস. কে কামরুল হাসান(সাতক্ষীরা) ॥
সাতক্ষীরার ভোমরাসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে অবাধে আসছে মাদক। মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা, অধিক অবৈধ মুনাফা অর্জনের প্রত্যাশায় প্রসাশনের সাথে সু-সম্পর্ক রেখে ভারত থেকে এ সকল মাদক দ্রব্য আমদানি করে থাকে। তাছাড়া ভারতীয় থ্রী-পিসের ভিতরে কৌশলে আমদানী করা হচ্ছে ফেন্সিডিল ও বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের মাদক দ্রব্যের ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে সেই সাথে ভারতে যাচ্ছে চোরায় রুট দিয়ে কটুন কাটুন ইলিশ, আর এসব পাচারের নিয়ন্ত্রন করছে অসাধু কিছু ব্যাবসায়িরা, বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়েছে মাদক ব্যাবসা যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক মারাত্মক হুমকি। মাদকের ছোবলে অকালে হারিয়ে যাচ্ছে বহু তাজা প্রান। অকালেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছে বহু তরুনের সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র থেকে জানা যায়, ভোমরার শীর্ষ চোরাকারবারী ও মাদকব্যবসায়ীরা হলেন, ভোমরা সিমান্তের মাদকের গডফাদার খালিদ হাসান শান্ত ও তার সহদর ভাই হুন্ডি ব্যবসায়ী পিন্টু। লক্ষীদাড়ী এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা হলেন মন্টু মিয়া, জাহিদ, আমিনুর, ঘোষপাড়া বাদলের মোড়ের মাদক স¤্রাট বাদল, দিলিপ, পুটে, জলাল, শরিফুল, মিজান, সওকাত। কুলিয়ার ফেনসিডিল ও ইয়াবা ব্যবসায়ীরা হলেন মিলন, কুলিয়া এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ী তুহিন, আমিনুর, কানা খোকা, চাকমা, রহমান, সুজায়েত সহ কুলিয়া শ্রীরামপুর এলাকার ভৈদু। সাতক্ষীরা মিলবাজার এলাকার গাজার স¤্রাট আব্দুল লতিফ মোড়ল, পদ্মশাখরা কোমরপুর এলাকার ইউপি মেম্বর শীর্ষ চোরাকারবারী ভারতীয় অবৈধ রেনু ও মাদক ব্যবসায়ী আলীম মেম্বর, বাশদহা এলাকার চোরাচালান ব্যবসায়ী নাজমুল, কেড়াগাছি এলাকার শীর্ষ স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও মাদক স¤্রাট মহিদুল, ঘাট ব্যবসায়ী আজহারুল, কেড়াগাছী গাড়াখালী এলাকার জোড়া মার্ডার মামলার আসামী ইয়ার আলী মেম্বর ছাড়াও হাড়দ্দাহ, বৈকারী, কুশখালী, তলুইগাছা, কাকডাঙ্গা, চান্দুড়িয়াসহ সাতক্ষীরার বিভিন্ন সীমান্তের চোরাই পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশের এক শ্রেনীর প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্য দিবালোকে এবং রাতের আধারে পাচার করে থাকে হাজার হাজার ফেন্সিডিলের কার্টুন। ভোমরা সীমান্তের ঘোষপাড়া, দাসপাড়া, লক্ষীদাড়ী মোল্লাপাড়া, লেবুতলা ও খইতলী নামক চোরাই রুট দিয়ে মাদক চোরাচালানিরা ফেন্সিডিল, মদ , গাজা, হেরোইন, ইয়াবা, নেশা জাতীয় ইনজেকশন ও বিভিন্ন প্রকার কার্টুন ভর্তি মাদক দ্রব্যের বড় বড় চালান পাচার করে নিয়ে আসছে। তথ্য সুত্রে জানতে পারি, নদী পথে বিভিন্ন ভারতীয় কাপড়ের লটের মধ্যে করে আমদানী করা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী লোকজনের সাথে কথা বলে জানতে পারি, মাদক ব্যবসায়ীরা নদীর পানিতে রশি দিয়ে পানির নিচ দিয়েও বস্তা বস্তা ফেন্সিডিল আমদানী করছে। এই সকল অভিনব কায়দায় আমদানী করা হচ্ছে মাদক দ্রব্য এবং সরবারহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধ্বংশ করছে দেশের যুব সমাজকে। শাখরা ও হাড়দ্দা সীমান্তের বসবাসকারি লোকজন জানায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট, ছোলাদানা, ঘোজাডাঙ্গা ও পানিতর থেকে বাংলাদেশী মাদক চোরাচালানিরা বিজিবি সদস্যদের চোখ এড়িয়ে ও কিছু অসাধু প্রসাশনিক কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অবৈধ পথে পাচার করে নিয়ে আসছে মাদক দ্রব্যের বড় বড় চালান। সীমান্তের ইছামতি নদী পাড়ি দিয়ে নৌকা যোগে ফেন্সিডিল সহ বিভিন্ন প্রকারের মাদক দ্রব্যের বড় আকারের চালান পাচার হয়। মাদক দ্রব্যের চোরাচালানিরা শাখরা শ্রীরামপুর সড়ক দিয়ে কখনো বা শাখরা থেকে কোমরপুর ও কুলিয়া টু আশু মার্কেট সড়ক দিয়ে পারুলিয়া ও কালিগঞ্জ সড়ক দিয়ে সরবারহ হয়। ভোমরা ইউনিয়নের কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, বর্তমানে উঠতি বয়সের কিছু যুবক ও প্রভাবশালী মহলের ছেলেরা মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। দুপুর হতেই শহরের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছেলেরা মোটর বাইক, প্রাইভেটকার নিয়ে মাদক সেবন করতে আসে এবং তাদেরকে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করতেও দেখা যায়। ঐসকল এলাকাবসী জানায়, চোরাঘাট মালিক ও তাদের সহযোগীরা এতই ভয়ংকর যে, তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে তাকে প্রাননাশের চেষ্টা চালায় ও মিথ্যা মাদকের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয় বলেও একাধিক সুত্রের অভিযোগ। অপর দিকে বৈকারী টু কদমতলা, মাধবকাটি, কুশখালী টু কদমতলা, কাকডঙ্গা টু ঝাউডাঙ্গা, কলারোয়া,কালিগঞ্জের ইয়াবা ও ফেনসিডিল ব্যাবসায়ী, রতনপুর ইউনিয়নের মহেষকুড় গ্রামের(১) রহিম শাহাজী, পিতা হাশেম শাহাজী (২) আরিফ হোসেন, পিতা মোজাফ্ফার হোসেন,আরশাফ আলী, পিতা শেখ রেজাউল, মনিরুল ইসলাম (মনি), পিতা আইয়ূব আলী এবং রতনপুরের সবুজ সহ আরো অনেকে। বিভিন্ন রুট দিয়ে সাতক্ষীরা সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয় মাদক। বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তার জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হস্থক্ষেপ কামনা করছে সচেতন মহল। এ ব্যাপারে বিজিবি নায়েক সুবেদারের কাছে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। মাদক ব্যবসায়ীরা যতই শক্তিশালী হোকনা কেনো আমরা কাউকেই ছাড় দেবো না, প্রতিটা সীমান্ত আমাদের নজরে ও নিয়ন্ত্রনে।