• রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

ভারত সন্ত্রাস কারখানা থেকে নৈরাজ্যকারীদের তৈরি করছে

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ভারত সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়ার পাশাপাশি পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা চালাতে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে তহবিল ও অস্ত্র দিচ্ছে বলে জাতিসংঘে আবারো অভিযোগ করেছে ইসলামাবাদ। জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তান মিশনের কনস্যুলার টিপু উসমান গত সোমবার বলেন, ভারত তার সন্ত্রাস কারখানা থেকে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের তৈরি করে যাচ্ছে। এর আগে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত মালিহা লোধির কঠোর বিবৃতির জবাবে ভারত তার অধিকার নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিল, সেটির প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মালিহার বক্তব্যে ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরের ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছিল। বিতর্কিত রাজ্যটি ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে নয়াদিল্লি যে দাবি করেছে, তিনি তা-ও প্রত্যাখ্যান করেন। উসমান তার মন্তব্যে বলেন, পাকিস্তানজুড়ে সন্ত্রাস ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেয়ার কাজে সম্পৃক্ত থাকা ভারতীয় গুপ্তচর কুলভূষণ যাদবকে হাতেনাতে ধরেছে পাকিস্তান। তাকে বিচারের আওতায়ও আনা হয়েছে। এর আগে ভারতীয় প্রতিনিধি পাউলোমি ত্রিপাঠি জাতিসংঘে বক্তৃতাকালে কাশ্মীর ইস্যুকে পুরোপুরি চেপে গিয়ে রাষ্ট্রদূত লোধির প্রদর্শিত ছবিটি নিয়েই কথা বলেন। পাকিস্তানি প্রতিনিধি বলেন, আপনারা কতবার মিথ্যা বলবেন, তা কোনো বিষয় নয়। আপনাদের মিথ্যা সত্য গোপন করতে পারে না। তিনি বলেন, ভারতীয় প্রতিনিধি আবারো প্রতিদিনকার মানুষের জীবন, মানুষের চোখ, শিশু ও নবজাতককে সারা জীবনের জন্য অন্ধ করে দেয়া, নারীদের ধর্ষণ, প্রাপ্ত বয়স্কদের গুলি করাসহ অধিকৃত এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া নৃশংসতার মতো আসল ঘটনা থেকে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের মনোযোগ সরিয়ে নেয়ার পথই বেছে নিয়েছে। প্রকৃত বিষয় হলো নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলো, ভারত এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। উসমান তার ভারতীয় প্রতিপক্ষকে বলেন, বিতর্ককে ছবির মধ্যে টেনে নেয়ার কাজটি হিতে বিপরীত হয়েছে। আপনাদের নিজেদের লোকজনই আপনাদের কথায় আমল দিচ্ছে না। তিনি বলেন, নির্দোষ কাশ্মীরিদের হত্যা ও নির্যাতনকারী ভারত একটি ছবির পেছনে লুকাতে চাইছে। এটা তার অপরাধ গোপন করার হতাশায় ভর করা এবং ব্যর্থ চেষ্টা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিষয়টি ব্যাপকভাবে ফুটে ওঠেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার ছবি দেখা যাচ্ছে। পাকিস্তানি প্রতিনিধি বলেন, কাশ্মীরিদের কখনো পরাজিত করা যাবে না। কাশ্মীরিরা বুলেটের পর বুলেট, পেলেটের পর পেলেট গ্রহণ করবে, কিন্তু তারা কখনো সংগ্রাম ত্যাগ করবে না। নেলসন ম্যান্ডেলা (পরলোকগত দক্ষিণ আফ্রিকান নেতা) যেভাবে হাল ছাড়েননি, ফিলিস্তিনি জনগণ যেভাবে কখনো হাল ছাড়েনি, কাশ্মীরিরাও সংগ্রাম ত্যাগ করবে না। তিনি বলেন, ভারতের নজর সরিয়ে দেয়ার কৌশলে বিরাজমান পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আনবে না। বাস্তব পরিস্থিতি নিয়ে ভারতকে জবাব দিতে হবে। ভারতকে তার যুদ্ধাপরাধ নিয়ে জবাব দিতে হবে। বৈধতা, নৈতিকতার জবাব দিতে হবে। আর যাতে কোনো শিশুকে অন্ধ করে না দেয়া হয়, আর যাতে কোনো নারী ধর্ষিতা না হয়, আর কোনো প্রবীণ লোককে মাটিতে ফেলে হত্যা করা না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের বিবেক হিসেবে কাজ করার জন্য বিশ্ব সংস্থাটির প্রতি আহŸান জানান তিনি। টিপু উসমান তার ভারতীয় সহকর্মীকে স্মরণ করিয়ে দেন, বর্ণবাদী শ্রেষ্ঠত্ব এবং ধর্মীয় প্রাধান্য ভারতের চরমপন্থী আরএসএসের রাজ নৈতিক মতাদর্শের অংশবিশেষ। তিনি বলেন, আরএসএসের সাবেক এই সদস্যরা এখন ভারতের ক্ষমতাসীন দলের অংশ হিসেবে ভারতজুড়ে, বিশেষ করে ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে একই নীতি চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। তারা এখন নীরবে বসে আছে আর প্রতিদিন ভারতজুড়ে শত শত নারী ধর্ষিতা হচ্ছে, সংখ্যালঘুরা বাস করছে সমাজের প্রান্তিক অবস্থানে, মুসলিম ও খ্রিস্টানদের প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, অন্যদিকে সমঝোতা ট্রেনে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা দেয়া হচ্ছে। ডন, জিওনিউজ।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ