পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন আনোয়ারুল হক কাকার। সোমবার (১৪ আগস্ট) দেশটির ৮ম তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেন তিনি। খবর ডনের।
পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে ইসলামাবাদের আইওয়ান-ই-সদরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কাকারকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান অসীম মুনির, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল নাদিম রাজা এবং সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।
এতে আরও অংশ নেন জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ, সিনেটের চেয়ারম্যান সাদিক সানজরানি, সিন্ধুর গভর্নর কামরান তেসোরি, পাঞ্জাবের গভর্নর বালিঘুর রহমান, খাইবার পাখতুনখোয়া গভর্নর হাজি গুলাম আলি, পিটিআই সিনেটর শাহজাদ ওয়াসিম এবং পিপিপি নেতা কারিম কুন্ডি।
তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের পর সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং তাদের সঙ্গে করমর্দন করেন আনোয়ারুল কাকার।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান হিসেবে এখন তার প্রথম কাজ হবে নির্বাচনকালীন সময়ে দেশ পরিচালনার জন্য একটি মন্ত্রিসভা গঠন করা।
এর আগে, পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এবং জাতীয় পরিষদের বিদায়ী বিরোধীদলীয় নেতা রাজা রিয়াজের মধ্যে দুই দফা বৈঠকের পর গত ১২ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর ঘোষণা দেয় পাকিস্তান সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ ও বিরোধী নেতা রিয়াজ তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকারকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়ে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির চিঠি পাঠিয়েছেন।
এর আগ পর্যন্ত পাকিস্তানের সম্ভাব্য সরকারপ্রধানের হওয়ার দৌড়ে খুব একটা আলোচনায় ছিলেন না আনোয়ারুল কাকার। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব তার হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন মহল।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের আগে গত শনিবার সিনেটর পদ এবং বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি) থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন আনোয়ারুল হক কাকার। রোববার তার পদত্যাগের আবেদন মঞ্জুর করেন সিনেটের চেয়ারম্যান।
কে এই কাকার?
২০১৮ সালে বেলুচিস্তান থেকে স্বতন্ত্র সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হন আনোয়ারুল হক কাকার। তার ছয় বছরের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে।
তিনি প্রবাসী পাকিস্তানি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সিনেটের স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন। একইসঙ্গে ব্যবসায়িক উপদেষ্টা কমিটি, অর্থ ও রাজস্ব, বৈদেশিক বিষয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন।
২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) সংসদীয় নেতার ভূমিকা গ্রহণ করেন আনোয়ারুল হক কাকার। টানা পাঁচ বছর এ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তবে পাঁচ মাস আগে দলটি নতুন নেতৃত্ব বেছে নিলে পদটি হারান এ রাজনীতিক।
২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত কাজ করেছেন বেলুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র হিসেবে।
ইসলামাবাদভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড কনটেম্পোরারি রিসার্চের (সিএসসিআর) তথ্যমতে, বেলুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন আনোয়ারুল কাকার।
ইংরেজি, উর্দু, ফার্সি, পশতু, বেলুচ এবং ব্রাহ্ভি ভাষায় তার দারুণ দক্ষতা রয়েছে বলে জানা যায়।