• রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমার সীমান্তে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে ভারতে অভিযান

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনারা মিয়ানমার সীমান্তে অভিযান চালিয়েছে।

বুধবার ভোরে অরুণাচলের লংডিং জেলার মিয়ানমার সীমান্তে নাগা জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএনের (খাপলাং) সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়।

সেনা সূত্রের দাবির বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ অভিযানে অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়েছে।

কোনো কোনো শিবির থেকে এ দাবিও করা হয়েছে, ভারত মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে নাগা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে সেনা।

তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষে এ খবরের সত্যতা অস্বীকার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সীমান্ত পার হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। ভারতীয় সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করেনি।

এর আগে ২০১৫ সালের জুন মাসে মণিপুরের চান্দেল জেলায় ভারতীয় বাহিনীর কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল এনএসসিএন। এতে নিহত হন ভারতীয় সেনার ডোগরা রেজিমেন্টের ১৮ সদস্য। এর পর থেকেই ওই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান তীব্র করা হয়।

গোয়েন্দা দফতর জানায়, চান্দেলের ওই হামলা পূর্বপরিকল্পিত ছিল। শুধু খাপলাং গোষ্ঠীর বিদ্রোহীরাই নয়, উত্তর-পূর্বের অন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সদস্যরাও এ অভিযানে অংশ নিয়েছিল।

মূলত ওই হামলার কিছু দিন আগেই উত্তর-পূর্বের জঙ্গি সংগঠনগুলো একটি সাধারণ মঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেছিল। তারই ফল ছিল ওই হামলা।

বুধবারের সংঘর্ষের বিষয়ে সেনা সূত্র জানায়, ভোর ৪টার দিকে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়।

সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কম্যান্ড জানায়, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্তে টহল দিচ্ছিল। এ সময় বিদ্রোহীরা হঠাৎ তাদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। সেনারা পাল্টা জবাব দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে তীব্র গুলিবিনিময় শুরু হয়।

একপর্যায়ে বিদ্রোহীরা পিছু হটলে তাদের ঘাঁটিতে গিয়ে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী।

অন্য একটি সূত্র জানায়, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা যে এই পথে আসবে তা আগেই জেনেছিলেন সেনারা। এ খবর পেয়েই সেনারা ওঁৎ পেতে ছিলেন। হঠাৎ হামলার মুখে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয় নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের। এদিকে তাদের হামলায় সেনারা কেউ আহত হননি বলে দাবি করা কয়েছে।

বিজেপির একটি মহল এবং সরকারি আমলাদের একটি ছোট অংশ এ দিনের সংঘর্ষের ঘটনাকে সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমারের মাটিতে নাগা জঙ্গিদের ঘাঁটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বলে দাবি করেছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী তা অস্বীকার করার পর তারা আর কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে সীমান্তে গোলাগুলির পাশাপাশি দিল্লিতে বুধবার থেকে ছয়টি নাগা বিদ্রোহী সংগঠনের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক আলোচনা শুরু হয়েছে।

আলোচনায় এনএসসিএন কিতোভি, এফজিএন, এনএনসি (প্রধান), এনএনসি (এনএ), এনএসসিএন রিফরমেশন  (খাপলাংয়ের সঙ্গ ত্যাগ করে আসা গোষ্ঠী) ও এনএনসির (জিডিআরএন) ১৬ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

ছয়টি সংগঠন মিলে ‘নাগা ন্যাশনাল পলিটিক্যাল গ্রুপ’ বা এনএনপিজি নামে একটি মোর্চা গঠন করেছে।

নাগা সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯৯৭ সাল থেকে কেন্দ্র শুধু এনএসসিএনের (আইএম) সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। তাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তির প্রস্তাবনাও স্বাক্ষর হয়েছে।

অন্য দলগুলোর দাবি ছিল- একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি চুক্তি করলেই রাজ্যে শান্তি ফিরে না। কারণ টাংখুল নাগাদের দল আইএম নাগাল্যান্ডের সব গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে না। সব গোষ্ঠীর মধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতাও নেই।

বুধবার দিল্লিতে কেন্দ্রের মধ্যস্থ আর এন রবির সঙ্গে এনএনপিজির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের বৈঠক হয়। এতে কিতোভি জিমোমি, ওয়াংতিং নাগা, পি তিখাকদের মতো নেতারা ছিলেন।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ