পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়ে দিলেন প্রয়োজনে তিনি ১,০০০ বছর পর্যন্ত হাজতবাস সহ্য করতে রাজি। এবং নিজের দেশের জন্য তিনি একবার কেন একাধিকবার জেলে যেতে প্রস্তুত। ৭০ বছর বয়সী খানকে রাষ্ট্রীয় উপহার (তোশাখানা) বিক্রি থেকে আয় গোপন করার জন্য ৫ আগস্ট একটি দায়রা আদালত তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়। বর্তমানে তিনি পাঞ্জাব প্রদেশের অ্যাটক কারাগারে বন্দি রয়েছেন। আইএইচসি প্রধান বিচারপতি আমের ফারুক এবং বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহাঙ্গিরির সমন্বয়ে গঠিত একটি ডিভিশন বেঞ্চ আগামী মঙ্গলবার মামলার (২২ আগস্ট) শুনানি হবে । দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন – এর রিপোর্ট অনুসারে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধানের আইনি দলের সদস্য উমিয়ার নিয়াজি, অ্যাটক কারাগারে খানের সাথে দেখা করার পর শুক্রবার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী “ভালো আছেন।” তবে দাড়ি বাড়ার জন্য তাঁকে একটি আয়না এবং শেভিং কিট দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
নিয়াজি জোর দিয়েছিলেন যে ছয়জনের একটি দলের মধ্যে শুধুমাত্র তাকেই খানের সাথে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আইনি দলের প্রবেশাধিকার অস্বীকার করার জন্য জেলারের আচরণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন নিয়াজি। নিয়াজির কাছে খান জানিয়েছেন -” আমি (জেলে) সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চিন্তা করি না। আমাকে ১,০০০ বছর জেলে রাখলেও তাতে কিছু আসে যায় না, কারণ আমি দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। ”খান দেশ জুড়ে ১৪০টিরও বেশি মামলার মুখোমুখি এবং ২০২২ সালের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হবার পর থেকে সন্ত্রাস, সহিংসতা, ব্লাসফেমি, দুর্নীতি এবং হত্যার মতো অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।
আইনজীবী নিশ্চিত করেছেন যে ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বুধবার সাইফার (গোপনীয় কূটনৈতিক তার) ইস্যু সম্পর্কে অ্যাটক কারাগারে খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল, এই সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তার আগের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। রিপোর্ট মোতাবেক , খান তার ভাগ্নে ব্যারিস্টার হাসান খান নিয়াজির “নিখোঁজ” সম্পর্কেও উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন ।
লাহোর হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাসানকে ১৮ আগস্টের মধ্যে আদালতে হাজির করার জন্য। পাশাপাশি হাসানের “অবৈধ আটক” নিয়ে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের আবেদন জানিয়েছে আদালত । এদিকে, পুলিশ শুক্রবার লাহোর হাইকোর্টকে জানিয়েছে যে , খানের ভাগ্নে হাসান নিয়াজিকে বিচারের জন্য একটি সামরিক আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতে দাখিল করা একটি পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , হাসানকে লাহোরে জিন্নাহ হাউস হামলা সংক্রান্ত মামলায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসাবে অভিযুক্ত করার পরে সেনাবাহিনী দ্বারা তাঁর তদন্ত করা হবে। ৯ মে ইসলামাবাদে খানকে গ্রেপ্তার করার পর এই প্রক্রিয়া শুরু হয়। পুলিশ হাসানকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করেছে। জিও নিউজ জানিয়েছে, কমান্ডিং অফিসারের অনুরোধে তাকে পরে কোয়েটা পুলিশ এবং পরে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।