মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেনে পাঠানোর জন্য নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্ককে অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনের পাইলটদের এফ-১৬ চালানোর প্রশিক্ষণ শেষ হলে বিমানগুলো ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে। তারা গত বছর থেকে এফ-১৬ বিমান পাওয়ার জন্য আলোচনা করে আসছিল। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এখন ইউক্রেন তাদের নতুন অস্ত্র সম্ভারের পুরো সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে।’ খবর বিবিসির
এর আগে ইউক্রেনে এফ-১৬ দেয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। সে সময় তারা বলেছিল যে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিলে তা পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন রাশিয়ার সথে তাদের যুদ্ধকে আরো ভয়াবহ করে তুলবে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এখন বিমান পাওয়ার অনুমোদন দেয়া হলেও এই এফ-১৬ ব্যবহার করা শুরু করতে কিয়েভের আরো অন্তত মাসখানেক সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস – দুই দেশকে এফ-১৬ বিমান হস্তান্তরের ‘আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত’ জানানো হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের একজন মুখপাত্র তার বক্তব্যে জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেনের পাইলটদের প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ শেষ হলেই’ যুদ্ধবিমান হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, নেদারল্যান্ডস তাদের বিমান বহর থেকে ২৪টি এফ-১৬ সরিয়ে নেবে এবং সেগুলোর জায়গায় আরও আধুনিক যুদ্ধবিমান দিয়ে বিমান বাহিনী সাজাবে। ডেনমার্কও তাদের বিমান বহরে থাকা ৩০টি এফ-১৬ বিমানের একটি অংশ সরিয়ে আরও আধুনিক বিমান যোগ করবে বলে বলা হচ্ছে।
নেদারল্যান্ডেসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওপকে হোয়েকস্ত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে মন্তব্য করেছেন যে ‘এর ফলে ইউক্রেন তাদের দেশ ও দেশের মানুষ রক্ষা করতে সক্ষম হবে। এখন আমরা আমাদের ইউরোপীয় সহযোগীদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করতে পারবো।’
ডেনমার্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেকব এলেম্যান-জেনসেন একই ধরণের কথা বলেছেন। ডেনমার্কের সংবাদ সংস্থা রিতজাওকে তিনি বলেন, ‘সরকার এর আগে বেশ কয়েকবার বলেছে যে প্রশিক্ষণের পর স্বাভাবিকভাবেই অনুদান দেয়া হবে। আমরা এখন জোটের মিত্রদের সাথে আলোচনা করবো।’
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে ‘দারুণ খবর’ বলে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স’এ তিনি লিখেছেন, আমাদের সেনাবাহিনী প্রমাণ করেছে যে তারা দ্রুতগতিতে শিখতে পারে। আমরা প্রমাণ করবো যে ইউক্রেনের জয়ও অবশ্যম্ভাবী। যুক্তরাষ্ট্র, নেদাল্যান্ডস ও ডেনমার্ককে ধন্যবাদ।
ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলো থেকে তৈরি ১১ জন সদস্যের একটি প্রশিক্ষক দল এই মাসের শেষদিকে ইউক্রেনের পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করবে। আগামী বছরের মধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আসন্ন শীত ও শরৎ ঋতুর মধ্যে কিয়েভ এফ-১৬ ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হতে পারবে না বলে এ সপ্তাহে মন্তব্য করেছিলেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইউরি ইহনাত।
ইউক্রেনে ২০২২ সালে পুরোদমে সেনা অভিযান শুরু করা রাশিয়া এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।