সমুদ্রের গভীরে এবার ড্রোন তৈরির বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কারণ যেভাবে সামরিক ক্ষেত্রে চীন ও রাশিয়া ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। আর সেই লক্ষ্যে চীন কিংবা রাশিয়ার হুমকি মোকাবেলায় এই ড্রোন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী। মার্কিন বিমানবাহিনী যখন আফগানিস্তান-ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশে নির্বিচারে ড্রোন ব্যবহার করছে, তখনই এই পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির নৌবাহিনী। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চে ইকো ভয়েজার নামে একটি নৌ-ড্রোনের কথা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাবিষয়ক বেসরকারি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বোয়িং। বোয়িংয়ের কাছেই এই ইকো ভয়েজারের কথা তুলে ধরা হয়। ৫১ ফুট লম্বা চালকহীন এই ডুবোযান দিয়ে পানির নিচে নজরদারি তৎপরতা চালানোর কথা বলা হয়েছে। ব্যাটারি ও ডিজেলচালিত ইকো ভয়েজার টানা কয়েক মাস পানির নিচে থাকতে পারে। এমনকি সাগরের খারাপ আবহাওয়াকে এড়িয়ে যেতে পারে এই নৌড্রোন। এছাড়া, ব্যাটারি বদলের জন্য মাঝেমধ্যে ভেসে উঠতে হবে একে। দাবি করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে পানির নিচে চালকহীন যানের তৎপরতা চালানোর ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে এই ইকো ভয়েজার। বোয়িং ফ্যান্টাম ওয়ার্কসের প্রেসিডেন্ট ডেরি ডেভিস এমনটাই বলেছেন। খুব শিগগিরই ইকো ভয়েজার পরীক্ষামূলকভাবে সাগরে নামানো হবে। প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি বজায় রাখার অংশ হিসেবেই এই পরীক্ষা চালানো হবে। মার্কিন বার্ড কলেজের সেন্টার ফর স্টাডি অব দ্য ড্রোন’র সহ-পরিচালক আর্থার হোলান্ড মাইকেল দাবি করেছেন, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছে। কারণ দেশ দুটির বিশাল নৌ-বাহিনী রয়েছে। আর এ অবস্থায় নৌ-জগতে চালকহীন প্রযুক্তি ব্যবহারের আগ্রহও স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে চলেছে। আগামী ৩০ বছরের মধ্যে এই নৌ-ড্রোন পুরো মাত্রায় ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে মাইকেল বলেন, এসব ড্রোন হবে নানা আকারের এবং নির্ভরযোগ্য। এছাড়া, উচ্চমাত্রার স্বয়ংক্রিয় হবে এগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের আগামী অর্থবছরে নৌ-ড্রোন উন্নয়ন খাতে ৩১ কোটি ৯০ লাখ ডলার ব্যয় করার প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী। ইকো ভয়েজার ছাড়াও সি হান্টার নামে পানির নিচে কাজ করতে পারে, এমন আরেকটি ড্রোন নিয়ে কাজ করছে পেন্টাগন। পানির নিচ থেকে শত্রু জাহাজ শনাক্ত এবং অনুসরণের কাজ করবে সি হান্টার। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে সি হান্টারকে আরও চৌকস করে তোলা হচ্ছে। আকাশের ড্রোন সহজে তথ্য পাঠানোর কাজ করতে পারে। কিন্তু পানির নিচের ড্রোন সেটা পারে না। কে-২৪ নিউজ, সিএনএন।