যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বিমানে করে গাজায় খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত এটি হচ্ছে প্রথম দফার জরুরি মানবিক সহায়তা।
ফিলিস্তিনিরা সামাজিক মাধ্যমে যে ভিডিও পোষ্ট করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সি-১৩০ মালবাহী বিমানে করে ত্রাণের বাক্সগুলো ফেলা হচ্ছে। এই মানবিক তত্পরতার প্রথম দফায় এই ছিটমহলে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রীর ৩৫,০০০ বাক্স বিমানের সাহায্যে ফেলা হলো। জাতিসঙ্ঘ বলছে, ওই অঞ্চলের এক-চতুর্থাংশই দুর্ভিক্ষের কাছাকাছি।
হোয়াইট হাউস বলেছে, বিমানে করে সহায়তা ফেলার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং ইসরাইল এই উদ্যোগকে সমর্থন করছে।
জর্দান ও মিশরের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারাও বিমানে করে ত্রাণসামগ্রী ফেলছে।
বৃহস্পতিবার ত্রাণবাহী যানবহর থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে অন্তত ১১৫ জন ফিলিস্তিনির প্রাণ নাশের ঘটনার পর বাইডেন এই মানবিক তত্পরতা শুরু করার নির্দেশ দেন। এটি পরিকল্পিত ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর প্রথম ঘটনা। হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের বিশৃঙ্খল ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হয়েছে।
গাজার উত্তরাঞ্চলে জনসাধারণ ও ইসরাইলি সৈন্যদের জড়িত করে এই ঘটনার এক দিন পরও এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এবং তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার বলেন, এই ভয়াবহ ঘটনার জন্য কারা দায়ী বের করা দরকার, এর কারণ কি সেটা বোঝার জন্য। তিনি ‘কার্যকর, অবাধ তদন্ত’ প্রয়োজন বলে মনে করেন। হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্রও বলেন এই ঘটনার, ‘পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন।’
ফিলিস্তিনি প্রত্যক্ষদর্শীরা সহায়তাবাহী যানবহরের জন্য অপেক্ষায় থাকা বিপুল সংখ্যক জনগণের উপর গুলি বর্ষণের জন্য ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করেছেন। ইসরাইল এই ভাষ্যের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে বলেছে বহু লোক ভিড়ের মধ্যে পায়ের তলায় পড়ে এবং পালিয়ে যাওয়া ত্রাণবাহী ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। একজন সামরিক মুখপাত্র বলেন জনগণকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য তাদের সৈন্যরা কেবল ‘কয়েকটি সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছিল।’
শুক্রবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অলিভিয়া ডাল্টন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে যাওয়ার সময় এয়ার ফোর্স ওয়ানে সংবাদদাতাদের বলেন, ‘সর্ব সাম্প্রতিক এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া দরকার।’
ডাল্টন গাজার উত্তরাঞ্চলের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত ভয়াবহ এবং আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের’ বলে অভিহিতকরেছেন। তিনি বলেন, প্রাণহানির ঘটনা ‘গভীর দুঃখের বিষয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আরো মনে করি, এই ঘটনাটি গাজায় সম্প্রসারিত মানবিক সহায়তার প্রবেশের প্রয়োজনীয়তার গুরুত্বকেই তুলে ধরছে।’
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা