ইসরাইলের প্রধান ধর্মীয় নেতা (চিফ রাব্বি) হুমকি দিয়েছেন যে সামরিক বাহিনীতে ভর্তি বাধ্যতামূলক করা হলে উগ্র ইহুদিরা ইসরাইল ত্যাগ করবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি ভয়াবহ হুমকি। কারণ, উগ্র ইহুদিরাই ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মূল অংশ। তারা না থাকলে ইসরাইলের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে।
জেরুসালেমে শনিবার রাতে সাপ্তাহিক পাঠদান অনুষ্ঠানে রাব্বি আইজ্যাক ইউসেফ ঘোষণা করেন, ‘তারা যদি আমাদেরকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করে, তাহলে আমরা বিদেশে চলে যাব।’ তার সম্ভাব্য গণ দেশত্যাগের ইঙ্গিত ইসরাইলের মূল ভিত্তিকেই বিপদগ্রস্ত করে ফেলতে পারে।
তাওরাত অধ্যয়নের ওপর জোর দেয়াটা ইসরাইলের সফলতা এবং অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ- এমন যুক্তি দিয়ে ইউসেফ বলেন, ‘ইয়েশিভা আর কোলেলরা বিশ্বকে টিকিয়ে রেখেছে। রাষ্ট্র অস্তিত্ব রয়েছে তাওরাত অধ্যয়নের ওপর। আর তাওরাত না থাকলে সেনাবাহিনী কোনো সফলতা পাবে না।’
তিনি ৭ অক্টোবর ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর সাফল্য লাভ করার কারণ হিসেবে ঐশী সহায়তা প্রাপ্তির কথা বলেন।
হেরেদিক ইহুদিদের সামরিক বাহিনীতে ভর্তি নিয়ে ক্রমবর্ধমান তীব্র বিতর্কের মধ্যে ইউসেফ এই মন্তব্য করলেন। এ বিষয়টি নিয়ে ইসরাইলি সমাজে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছে।
প্রধান রাব্বি তার হুমকিতে বলেন, ‘আমরা টিকিট কিনব, সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক ভর্তি কোনো কিছুতেই হতে পারে পারে না।’ তিনি বলেন, তারা ধর্মীয় বিশ্বাসে আপস করার বদলে অন্য কোথাও চলে যাবেন।
হেরেদিক সম্প্রদায়ের মধ্যে এ ধরনের ভাবাবেগ এই প্রথম নয়। ইউসেফের পরলোকগত পিতা সাবেক প্রধান রাব্বি ওভাদিয়া ইউসেফ ২০১৩ সালেও এমন ধরনের কথা বলেছিলেন। তিনি ওই সময়ে বলেছিলেন, তাদেরকে সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলক ভর্তি করা হলে তারা ইসরাইল ত্যাগ করবে।
উল্লেখ্য, ওভাদিয়া ইউসেফ ছিলেন শাস পার্টির আধ্যাত্মিক নেতা। এই দলের ওপর ইউসেফের বিপুল প্রভাব রয়েছে। আর তারা হলো প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোটের অংশ।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর পারসোন্যাল ডিরেক্টরেট গত মাসে নেসেট কমিটিকে জানিয়েছে, আল্ট্রা-অর্থোডক্স সম্প্রদায় থেকে প্রায় ৬৬ হাজার তরুণ গত বচর সামরিক বাহিনীতে যোগদান থেকে অব্যাহতি পেয়েছে। ইসরাইলের মধ্যে এই সম্প্রদায়ের জন্মহার সবচেয়ে বেশি। ৭ অক্টোবর হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই সম্প্রদায় থেকে প্রায় ৫৪০ জন ইসরাইলি বাহিনীতে যোগ দিয়েছে।
ইসরাইল ডেমোক্র্যাসি ইনস্টিটিউটের হিসাব অনুযায়ী ২০২২ সালে হেরাদি সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৮০ হাজার। তারা ইসরাইলের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৩.৩ ভাগ।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট, টাইমস অব ইসরাইল