• রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০১:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
নিজ দলের কর্মীদের হামলার শিকার মির্জা ফখরুলের ভাই ফেনীতে পানি কমতে শুরু করায় ফুটে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ইরানকে পরমাণু ইস্যুতে নতুন প্রস্তাব পুতিনের, যে সিদ্ধান্ত নিল তেহরান ব্রিটিশ ৬০ এমপির ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা: আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আসামির। এবার ‘৫ কোটি টাকা’ দাবিতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-গুলি রাস্তায় অভিনেত্রী যৌন হেনস্তা শিকার সারাদেশে চাঁদাবাজ ও আধিপত্য বিস্তারকারীদের তালিকা হচ্ছে: আইজিপি শ্রীপুরে নির্যাতিত নেতা কর্মীদের সংবর্ধনা ও মিলন মেলা অনুষ্ঠিত গাবতলীতে জিয়া পরিষদ নেতা ছানার বাবার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ

আজ রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫

‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’—গানের স্রষ্টা, কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ, ২১ জুন। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে ১৯৯১ সালের এই দিনে পরলোকগত হন বাংলাদেশের আধুনিক কবিতার উজ্জ্বলতম নক্ষত্র, যিনি ছিলেন তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক।

এই উপলক্ষে কবির গ্রামের বাড়ি মোংলার মিঠাখালীতে ‘রুদ্র স্মৃতি সংসদ’-এর আয়োজনে কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, শোভাযাত্রা, মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, মোংলা শাখা স্মরণসভা আয়োজন করেছে। সভা শেষে কবির কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করা হবে।

১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালের রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। তার পৈতৃক নিবাস বাগেরহাট জেলার মোংলার মিঠাখালী গ্রামে। জন্মনাম শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ হলেও পরবর্তীতে তিনি নিজেই গ্রহণ করেন ‘রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’ নামটি।

তার বাবা শেখ ওয়ালীউল্লাহ ছিলেন একজন চিকিৎসক, মা শিরিয়া বেগম। রুদ্র পড়াশোনা করেন ঢাকার ওয়েস্ট অ্যান্ড হাই স্কুল, ঢাকা কলেজ এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। তিনি ১৯৮০ সালে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৮৩ সালে এমএ সম্পন্ন করেন।

ছাত্রজীবনেই তার সাহিত্যজীবনের সূচনা। প্রথম কাব্যগ্রন্থ উপদ্রুত উপকূল প্রকাশিত হয় ১৯৭৯ সালে। ১৯৮১ সালে প্রকাশিত হয় ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম। এই দুটি কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি ‘সংস্কৃতি সংসদ’ আয়োজিত ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন।

তিনি রচনা করেন সাতটি কাব্যগ্রন্থ, কাব্যনাট্য, গল্প এবং অর্ধশতাধিক গান। তার লেখা ও সুরারোপিত ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ গানটি দুই বাংলায় বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। জানা যায়, ১৯৮৭ সালে লেখিকা তসলিমা নাসরীনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মোংলায় বসে তিনি গানটি রচনা ও সুর করেন। ১৯৯৭ সালে এই গানটির জন্য তিনি মরণোত্তর শ্রেষ্ঠ গীতিকারের সম্মাননা পান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি থেকে।

২০২৪ সালে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ একুশে পদকে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

তার কাব্যভাষায় মূর্ত হয়েছে দ্রোহ ও প্রেম, প্রতিবাদ ও স্বপ্নের যুগল সুর। একদিকে যেমন উচ্চারণ করেন—‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’, তেমনি সাহসের সঙ্গে বলেন—‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই।’

অসাম্য, শোষণ, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তার অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে একটি প্রতীকী সত্তায়—যা প্রতিফলিত হয় তার লেখায়, ব্যক্তিত্বে এবং সংস্কৃতিকর্মে।

তারুণ্যের ভাষ্যকার রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ আজ জীবিত না থাকলেও, তার কবিতা ও গান আজও নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছে। সংকটের সময়ে তার কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠে প্রতিবাদের হাতিয়ার, স্বপ্নের দিশারি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ