দীর্ঘ চার দশকের সংঘাত অবসান করতে সম্মত হয়েছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দেশদুটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শান্তিচুক্তির একটি খসড়ায় দুদেশই সম্মতি দিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশদুটি ৮০’র দশকের শেষ হতে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আছে। আজারবাইজানের নাগার্নো কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে এ সংকটের সূচনা। ওই অঞ্চলে সে সময় জাতিগত আর্মেনীয়দের বাস ছিল। আর্মেনিয়ার সহায়তায় আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আর্মেনিয়ার সঙ্গে যোগ দেয় নাগার্নো কারাবাখ।
আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে শান্তিচুক্তির একটি খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। আজারবাইজানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের সময় নির্ধারণ নিয়ে তারা আলোচনা করবে। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের জন্য তারা প্রস্তুত আছে।
আজারবাইজানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শান্তিচুক্তি এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে।
তবে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের সঠিক দিনক্ষণ এখনও অনিশ্চিত রয়ে গেছে। কারণ চুক্তি স্বাক্ষরের আগে আর্মেনিয়ার সংবিধান সংশোধনের শর্ত দিয়েছে আজারবাইজান। তাদের দাবি, আর্মেনিয়ার বর্তমান সংবিধানে তাদের ভূখণ্ডের প্রতি পরোক্ষ দাবি করা হয়েছে।
আর্মেনিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান সম্প্রতি বলেছেন, দেশের সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে এবং এটি করতে গণভোট আহ্বান করা হতে পারে। তবে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।
১৯৮০র দশকে হাজার হাজার মুসলিম আজেরি আর্মেনিয়া থেকে এবং খ্রিষ্টান আর্মেনীয় আজারবাইজান থেকে বিতাড়িত হন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আজারবাইজান সামরিক অভিযানের মাধ্যমে নাগর্নো-কারাবাখ পুনর্দখল করে। ফলে সেখান থেকে প্রায় এক লাখ আর্মেনীয় শরণার্থী হিসেবে আর্মেনিয়ায় পালিয়ে যায়।
এরপর থেকে জোরেশোরে শান্তি চুক্তির জন্য আলোচনা শুরু হয়। দীর্ঘদিনের সংঘাতের অবসান ঘটাতে দুদেশের পক্ষ থেকেই একাধিকবার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় অগ্রগতি ছিল খুবই ধীর।