• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

রংপুর সিটি নির্বাচন

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭

দীর্ঘ প্রচার-প্রচারণা শেষে রংপুরবাসী নগরপিতা নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন আজ। স্থানীয় নির্বাচন হলেও জাতীয় নির্বাচনের মাত্র এক বছর আগে বড় দলগুলো নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের পরীক্ষা হিসেবে নিয়েছে নির্বাচনটিকে। এছাড়া দীর্ঘ নয় বছর পর নৌকা, ধানের শীষ ও লাঙ্গল সরাসরি প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়ায় অন্যরকম আমেজ তৈরি হয়েছে রংপুরে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতাদের সরব উপস্থিতি অন্তত সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অনেক ঘটনা ঘটলেও বড় ধরনের কোনো হাঙ্গামা হয়নি। বিষয়টি ইতিবাচক। এখন জনগণ তাদের ভোটাধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে পারলেই নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী- সবার পরিশ্রম সার্থক হবে।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের একটি বিশেষ দিক হল, এখানে মহাজোট সরকারের অন্যতম শরিক দল এরশাদের জাতীয় পার্টি আলাদা প্রার্থী দিয়েছে। জনগণ তাদের নগরপিতা হিসেবে যাকে পছন্দ করবে সে-ই শেষ হাসি হাসবে, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এজন্য ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন, তা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকেই নিশ্চিত করতে হবে। বিগত সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের ভোটে অনিয়মের অনেক নজির আছে। আমরা আশা করি, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তেমন খারাপ নজির রংপুরে তৈরি হবে না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ যেন স্বার্থ হাসিল ও হাঙ্গামার মাধ্যমে বিতর্ক সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও প্রার্থী- সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচন জাতীয় প্রতীকে হওয়ার লাভ-ক্ষতি দুই-ই আছে। লাভের ক্ষেত্রে বলা যায়, সবাই যদি সত্যিকার গণতন্ত্র চর্চা প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করেন এবং শীর্ষ নেতারা সেখানে গিয়ে জনসাধারণকে গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন এবং ছোট শহরে বহু কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে নিজেদের দূরত্ব কমিয়ে আনতে পারেন, তা অবশ্যই ইতিবাচক। অন্যদিকে ক্ষতির দিকটি হল, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের মূল উদ্দেশ্য স্থানীয় সমস্যার সমাধান করে শক্তিশালী উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তোলা। এক্ষেত্রে দল-মত নির্বিশেষে যে কোনো যোগ্য প্রার্থীকে জনগণ বেছে নিতে পারে; কিন্তু জাতীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় স্থানীয় সমস্যা সমাধানের চেয়ে প্রতীকই হয়ে ওঠে মুখ্য।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচন এটি। সিটিতে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টিসহ মোট ৩৩টি ওয়ার্ডে ৩ লাখ ৯৩ হাজারের বেশি ভোটার ৭ জন প্রার্থী থেকে একজনকে মেয়র, ২১১ জন প্রার্থী থেকে ৩৩ জনকে কাউন্সিলর হিসেবে বেছে নেবেন। তুলনামূলক কম উন্নত উত্তরের শান্তশিষ্ট রংপুরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এ নগরীর প্রায় চার লাখ ভোটারের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ হাজার সংখ্যালঘু এবং ২৫ থেকে ৩০ হাজার বিহারি। তারা সবাই যদি কোনো ধরনের জালভোট, হয়রানি ও বাধার মুখে না পড়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, তাহলে সেটা হবে গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে একটি ভালো উদাহরণ। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, সরকার, শাসক ও বিরোধী দল ও সব প্রার্থী সচেতন থাকবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে, এটাই কাম্য।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ