• মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৮ অপরাহ্ন

কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলো মেট্রো রেলকর্মীরা

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মেট্রো রেলের কর্মীরা। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন সহকর্মী এমআরটি পুলিশ সদস্যের হাতে লাঞ্ছিতের ঘটনায় আজ সোমবার সকাল থেকে আড়াই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন তারা। পরে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন। এতে করে একক যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল হক বলেন, মারধরে যারা জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিষয়টি নিয়ে মিনিস্ট্রি একটি কমিটি করেছে।

এর আগে গতকাল রবিবার মধ্যরাতে ‘ঢাকা ম্যাচ ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দে’র ব্যানারে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ছয়টি দাবির কথা তুলে ধরেন তারা।

দাবিগুলো হচ্ছে— আগামী এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা ওই পুলিশ সদস্যকে (এস আই মাসুদ) স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে ও ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব পুলিশ সদস্যকে (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত) শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে; মেট্রোরেল, মেট্রো স্টাফ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে হবে; এমআরটি পুলিশকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে; স্টেশনে দায়িত্বরত সিআরএ টিএমও, স্টেশন কন্ট্রোলারসহ অন্য সব কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; অফিসিয়াল পরিচয় পত্র ছাড়া ও অনুমতি ব্যতি কোনো ব্যক্তি যেন স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে এবং আহত কর্মীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে বলা হয়, দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মেট্রোরেলের সব স্টাফ কর্মবিরতি পালন করবো এবং প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং মেট্রো স্টেশনে নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলা হয়, আনুমানিক বিকেল সোয়া ৫টায় দুজন মহিলা কোনো প্রকার পরিচয়পত্র প্রদর্শন না করেই সিভিল ড্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে এসে ইএফও অফিসের পাশে থাকা সুইং গেট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান।

যেহেতু তারা নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিহিত ছিলেন না ও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, তাই দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআরএ নিয়ম অনুযায়ী তাদের সেখান থেকে পিজি গেইট ব্যতীত সুইং গেট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চান। তবে, সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা এতে উত্তেজিত হয়ে তর্কে লিপ্ত হন এবং একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরবর্তীতে ঠিক একইভাবে দুজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেট ব্যবহার করে সুইং গেট না লাগিয়ে চলে যান, উক্ত বিষয়ের কারণ তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা পূর্বের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।

কিছুক্ষণ পরে পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে আরো কয়েকজন পুলিশ এসে দায়িত্বে থাকা সিআরএ এর সঙ্গে ইএফওতে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং ইএফও থেকে বের হওয়ার সময় কর্মরত সিআরএ এর কাঁধে বন্ধুক দিয়ে আঘাত করে এবং কর্মরত আরেকজন টিএমও এর শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করে। উপস্থিত স্টেশন স্টাফ ও যাত্রীগণ বিষয়টি অনুধাবন করে উক্ত এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মরত টিএমওকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসে।

উক্ত পরিস্থিতি মেট্রোরেল কর্মপরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। বর্তমানে আহত (রাইফেল দিয়ে কাঁধে আঘাত করা হয়) সিআরএকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান করার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং টিএমও (যাকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে হেনস্তা করা হয়, গুলি করার জন্য বুকে রাইফেল ধরা হয়) উক্ত ঘটনার বিবৃতি দেওয়ার পর বাসায় যাওয়ার পথে জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ