রংপুর অফিস॥
রংপুর লাহিড়ীরহাট সাহাবাজপুর ব্লকে গম ফসলের উপর দস্তা সারের প্রভাব শীর্ষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই) এর মৃত্তিকা সম্পদ বিভাগের আয়োজনে রংপুর সরেজমিন কৃষি গবেষণা বিভাগের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. সেলিনা হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএআরআই গাজীপুরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মো. আশরাফ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর জেলার উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. সারওয়ারুল হক, বিএআরআই এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. সোহেলা আক্তার ও কৃষি তথ্য সার্ভিস রংপুরের আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আবু সায়েম।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন জিংক উদ্ভিদ-প্রাণি ও মানব দেহের অপরিহার্য উপাদান। বিশ^ জুড়ে ৪.৫ লক্ষ শিশু জিংকের অভাবে প্রতি বছর মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। জিংক ঘাটতির দেশগুলো মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে অবস্থান করছে। এ দেশে মানুষের খাদ্যে ও প্রাণির খাদ্যে যে পরিমাণ জিংক থাকার কথা তার চেয়ে কম বিদ্যমান। ফলে এ দেশের ৫৫ ভাগ মানুষ জিংক ঘাটতিতে আছে। ফসলে জিংক সমৃদ্ধকরণের মাধ্যমে মানুষের খাদ্য তালিকায় দস্তার অভাব মোকাবেলার একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে। সে লক্ষে বিএআরআই এর মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ দস্তা সার ব্যবহারের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষ অতিথি কৃষিবিদ ড. মো. সারওয়ারুল হক বলেন বর্তমানে সারা বিশে^ প্রতিবছর ৮ লক্ষ মানুষ দস্তার অভাবে মারা যাচ্ছে। জমিতে দস্তা সার দিলে প্রকারন্তে সেটা ফসল-খাবারের মাধ্যমে মানুষের দেহে দস্তার অভাব পূরণ করে। প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. সোহলো আক্তার বলেন বিশ^জুড়ে মানুষের খাবার পুষ্টি সমৃদ্ধ করতে বায়ো-ফর্টিফিকেশন করা হচ্ছে। গম চাষে দস্তা সারের পরিমিত ব্যবহার তারই একটি অংশ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন।
মাঠ দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে কৃষক শাসছুল আলম বলেন মাটি পরীক্ষা করে তার জমিতে দস্তা সারের ঘাটতি দেখা যায়। গবেষকদের পরামর্শ অনুযায়ী তার গমের জমিতে পরিমিত পরিমাণে জিংসহ অন্যান্য সার প্রয়োগ করেছেন এবং ফলনও ভাল হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানের উপস্থিত সকল কৃষকগণ গবেষণা প্লট পরিদর্শন করেন। মাঠ দিবসে অন্যান্যদের মাঝে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ ড. মো. জান্নাতুল ফেরদৌস, কৃষিবিদ মো. খায়রুর আলম, কৃষিবিদ ড. মো. ইয়াকুব আলী, কৃষিবিদ মো. খায়রুল ইসলাম প্রমুখ। মাঠ দিবসে প্রায় দুই শতাধিক জন কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।