রংপুর অফিস॥ রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় পলাতক একজনসহ জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি),র ৭ জঙ্গির মৃত্যুদ-াদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার এ রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির দ-প্রাপ্তরা হলেন, জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী, ওই জঙ্গি সংগঠনের সদস্য এছাহাক আলী, লিটন মিয়া ওরফে রফিক, বিজয় ওরফে আলী ওরফে দর্জি, সাখাওয়াত হোসেন, সরওয়ার হোসেন ওরফে সাবু ও চান্দু মিয়া। এদের মধ্যে চান্দু পলাতক রয়েছেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি আবু সাঈদ, তৌফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব, বাবুল আখতার, সাহাদাত ওরফে রতন ও পলাতক নজিবুল ইসলামকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
এদের মধ্যে মাসুদ রানা, এছাহাক আলী, লিটন মিয়া ও সাখাওয়াত হোসেন চাঞ্চল্যকর জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি। এর আগে সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ১১ আসামিকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।
বিশেষ জজ আাদালতের পিপি অ্যাড রথিশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা জানান, এই মামলায় বাদীসহ ৪৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে পলাতক এক জঙ্গিসহ সাত জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বিচারক। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাড. আবুল হোসেনসহ কয়েকজন আইনজীবী।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাতে কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা, পল্লী চিকিৎসক ও মাজারের খাদেম রহমত আলী বাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে চৈতার মোড় নামক স্থানে তাকে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ ওই মামলায় ১৪ জেএমবির সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। যার মধ্যে আসামি পঞ্চগড়ের নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক হাসান ২০১৬ সালের ১ আগস্ট রাতে রাজশাহীতে এবং কুড়িগ্রামের সাদ্দাম হোসেন ২০১৭ সালের ৫ জানুযারি ঢাকায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। শুনানী শেষে বিচারক নিহত দুই জঙ্গিকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১৬ আগস্ট ১২জনের নামে অভিযোগ গঠন করেন। এদিকে, অভিযোগ গঠনের পর মামলার বাদী নারাজি এনে পুন:তদন্তের দাবি জানালে আদালত বাদীর আবেদন খারিজ করে দেন। পরে উচ্চ আদালতে আপিল করলে আদালত পুন:তদন্ত করে ৪০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পুলিশ হেড কোয়াটার, রংপুরকে নির্দেশ দেন।
পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার পুন:তদন্ত শেষে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ১৩ জঙ্গির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরমধ্যে বিজয় ওরফে আলী ওরফে দর্জি নামে এক জঙ্গিকে এই মামলায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাতে মাজারের খাদেম ও আওয়ামী লীগ নেতা রহমত আলীকে জবাই করে এবং ওই বছরের ৩ অক্টোবর কাউনিয়ার আলুটারী গ্রামে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।