শনিবার বিকেলে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার স্বাস্থ্য নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, কারাগারে মেডিকেল বোর্ডের ডাক্তাররা বেগম জিয়াকে যেসব ঔষধপত্র দিয়েছেন সেগুলো কোনো কাজ করছে না। ওইগুলো তার রোগের বা যন্ত্রণার লাঘব করছে না। আজকে আমরা তাকে যা দেখেছি, এতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছি। তার শরীর আসলেই অত্যন্ত খারাপ। এবং তিনি যে হাসপাতালে (ইউনাইটেড হসপিটালে) চিকিৎসার কথা বলেছেন, সেখানে রেখে তার দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। আর তিনি যে বর্ণনা দিয়েছেন, তার বাম হাত আস্তে আস্তে শক্ত হয়ে যাচ্ছে এবং বাম হাতের ওজনও বেড়ে গেছে। বাম পা থেকে শুরু করে পিছন পর্যন্ত ব্যথা বেড়ে গেছে। সুতরাং এখন সাধারণভাবে হাঁটা-চলা করাও তার জন্য মুশকিল হয়ে পড়েছে। আর এটা আস্তে আস্তে নিউরো সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং ক্ষয় হয়ে যায়। আর এক সময় এটা প্যারালাইসিসের মতো হয়ে যেতে পারে। আর্থাটাইটিসের যে সমস্যাটা, সেই সমস্যাটা হচ্ছে যে, সেটা আস্তে আস্তে নিউরো প্রবলেম্বের সৃষ্টি হয়। ডাক্তার সাহেবরা বলেছেন যে, এটা স্টিভ হয়ে যায়। এতে প্যারালাইসিসের দিকে চলে যেতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু তাই নয়, তার ডান চোখটা লাল হয়ে আছে। এটা বেড়ে গেলে তার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, সরকারের আর বিলম্ব না করে অবিলম্বে তিনি যে হাসপাতালে যেতে চেয়েছেন, সেখানে রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া বিশেষভাবে প্রয়োজন। এটা সরকারের দায়িত্ব। আর যদি এর কোনো ব্যত্যয় ঘটে বা শারীরিক কোনো ক্ষতি হয় তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। তিনি বলেন, দ্রুত প্রয়োজন পরিবেশটা পরিবর্তন করার। তিনি যে নির্জন অন্ধকার স্যাঁতস্যাতে পরিবেশে আছেন সেই পরিবেশে সুস্থ লোক থাকলেও অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু অসুস্থ লোক সুস্থ হতে পারে না।
শনিবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খান প্রধান ফটক দিয়ে কারাগারে প্রবেশ করেন। সাক্ষাৎ শেষে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন বিকাল ৫টা ৫ মিনিট। পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল এই তিন নেতা সাক্ষাতের জন্য অনুমতি নিয়ে কারাগারে গেলেও অসুস্থতার কারণে সাক্ষাৎ পাননি। সর্বশেষ গত ৬ এপ্রিল একাই মির্জা ফখরুল কারাগারে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেন।