তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি॥
রাজশাহীর তানোরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একশ্রেণীর মুনাফাখোর শিক্ষক শিক্ষা নিয়ে রিতিমতো বাণিজ্য করছে। এসব শিক্ষকেরা টিউশন বন্ধ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মানছেন না। এতে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি একদেশে দুই আইন না শিক্ষকরা সরকারের থেকেও বেশি শক্তিশালী, যদি সেটা না তাহলে প্রকাশ্যে দিবালোকে এসব শিক্ষকরা এই অপকর্ম করছেন কি ভাবে ?। জানা গেছে, তানোরে ৪৭টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ২৮টি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিংহভাগ শিক্ষক নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অথবা নিজ বাসায় সাইনবোর্ড দিয়ে অর্থের বিনিময়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছে। অথচ শিক্ষকদের শ্রেণীকক্ষে পাঠদানে মনোযোগী করার লক্ষ্যে শিক্ষামন্ত্রণালয় ২০০৮ সালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে শিক্ষকদের টিউশনি বন্ধের নির্দেশনা (পরিপত্র) জারি করেছেন। কিšত্ত তানোরে শিক্ষকরা সেই নির্দেশনা মানছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তানোরের মুন্ডুমালা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক (গণিত) ইব্রাহিম হাবিবুল্লাহ তার নিজ বাড়িতে প্রতিদিন দুই সিফটে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে তারা প্রাইভেট পড়েন। তারা আরো বলেন, প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয়ভীতি দেখানো হয় তাই তারা বাধ্য হয়ে এখানে প্রাইভেট পড়েন। তবে শিক্ষক ইব্রাহিম হাবিবুল্লাহ এসব অভিযোগ অন্বীকার করে বলেন, আমরা কখনও কাউকে জোর করে প্রাইভেট পড়াতে চাই না ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনেই তারা আমাদের কাছে প্রাইভেট পড়তে আসে, আবার অনেক শিক্ষার্থীর অভিবাবকের অনুরোধে তাদের পড়াতে হয়। তানোরের মোহাম্মদপুর স্কুলের সহকারী শিক্ষক (রসায়ন) দুরুল ইসলাম তেলোপাড়া তার নিজ বাড়িতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। এক সঙ্গে এতো শিক্ষার্থীর প্রাইভেট পড়ানো দেখে প্রথমে যে কেউ বলবেন এটা স্কুল। অথচ এসব প্রাইভেট পড়ানো শিক্ষা নীতিমালার সুস্পস্ট লঙ্ঘন হলেও বিষয়টি যেনো দেখার কেউ নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তানোর উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, একশ্রেণীর শিক্ষক রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা না করে টিউশনি করতে ব্যস্ত থাকেন। এসব শিক্ষকের টিউশনি করার প্রবণতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং জরুরীভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, আর তা না হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এব্যাপারে তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের টিউশনি বন্ধের জন্য পত্র পাঠানো হয়েছে। এর পরও যদি কেউ টিউশনি বন্ধ না করে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।