কুড়িগ্রামে রাঁধুনি, মালি, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে চলছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার কাজ। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় বছরের পর বছর এভাবেই চলছে চিকিৎসাসেবা। এতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ওয়ার্ড বয়, মালি, রাঁধুনি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা করছেন সার্জারি ও অপারেশনের কাজ। শুধু অপারেশন থিয়েটার নয়, হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগেও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন কর্মীরা।
রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে হাসপাতালটি ২৫ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। জনবল রয়েছে মেডিকেল অফিসার পদে আটজন, নার্সিং সুপারভাইজার একজন, সিনিয়র নার্স ২৬ জন, মিডওয়াইফ ছয়জন, ল্যাব টেকনিশিয়ান দুজন, প্রধান সহকারী একজন, অফিস সহায়ক তিনজন, ফার্মাসিস্ট দুজন, পরিসংখ্যানে একজন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক দুজন, অ্যাম্বুলেন্স চালক একজন, মালি একজন, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে পাঁচজন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী তিনজন।
স্বাস্থ্য সহকারী ৩০টি পদের বিপরীতে ১৭ জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে ছয়জনের বিপরীতে চারজন, ওয়ার্ড বয় তিনটি পদের মধ্যে একজন রয়েছেন।
তবে ডেন্টাল চিকিৎসক, এমটি ডেন্টাল, ইপিআই, রেডিও গ্রাফার, কার্ডিওগ্রাফার, ক্যাশিয়ার, স্টোরকিপার, জুনিয়র মেকানিকেল পদগুলো শূন্য রয়েছে।
কথা হয় রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাঁধুনি পদে কর্মরত বাচ্চু মিয়ার তিনি বলেন, ‘আমার পদ রাঁধুনি হলেও আমি জরুরি বিভাগের সব কাজই পারি। এর আগেও আমি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, ফুলবাড়িসহ অন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওয়ার্ড বয় হিসেবে কাজ করেছি। এ হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় না থাকায় জরুরি বিভাগ দায়িত্ব পালন করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মতো হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে মালি পদের দেলোয়ার হোসেন, মিজানুরও এ কাজ করে থাকেন। চিকিৎসা দিতে আমাদের কোনো সমস্যা হয় না।
বোতলার পাড় গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘পুত্রবধূর অক্সিজেন মাস্ক খোলার জন্য রাজারহাট হাসপাতালে এসেছি। এখানে কাজ করা লোকের তো নাম জানি না। কালো করে খোঁচা খোঁচা দাড়ির এক ব্যক্তি মাস্ক খুলে দিয়ে ১০০ টাকা নিয়েছে। আবার এক সপ্তাহ পর ডেকেছে।’
মালি পদের দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি ফুলের বাগান দেখভালের জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। তবে জরুরি বিভাগেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করি। সেলাই ও ড্রেসিংয়ের কাজও আমার জানা আছে।
এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, জনবল সংকটের কারণে রাঁধুনি, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মালি এবং স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জরুরি বিভাগ ও অপারেশন থিয়েটারের কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে তিনজন ওয়ার্ড বয়ের বিপরীতে আছেন একজন। তিনিও বর্তমানে উমর মজিদ ইউনিয়ন সাব সেন্টারে কর্মরত।