• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

রাজস্ব ভাগাভাগিতে জটিলতা, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২ মাস বন্ধ জন্মনিবন্ধন

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয় এবং ডিএসসিসির লোগো

গত সপ্তাহে পাসপোর্ট সংক্রান্ত জরুরি প্রয়োজনে জন্মনিবন্ধন সংশোধন করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) আসেন পুরান ঢাকার বকশিবাজার এলাকার বাসিন্দা সাইফুর রহমান। নানা দফতর ঘুরেফিরে বেড়ানোর পর তাকে জানানো হয় জন্মনিবন্ধন সেবা বন্ধ। কী কারণে বন্ধ বা কবে থেকে চালু হবে তা জানার চেষ্টা করেও তিনি জানতে পারেননি। গত দুই মাস ধরে এমন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ডিএসসিসিতে জন্মনিবন্ধন করতে আসা মানুষেরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয় এবং ডিএসসিসির মধ্যে রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতায় প্রায় দুই মাস ধরে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে ডিএসসিসি। সংস্থাটি বলছে, জন্মনিবন্ধন খাতে আয় হওয়া রাজস্ব আইন অনুযায়ী তারা পাচ্ছে না। এ সমস্যার সুরাহা হওয়া পর্যন্ত তারা এ সেবা বন্ধ রাখবেন বলেও জানান।

জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের ফি পরিশোধে গত এপ্রিল মাসে সীমিত পরিসরে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু হয়। পরে পর্যায়ক্রমে সারা দেশেই ই-পেমেন্ট বা অনলাইনে ফি পরিশোধের সুবিধা চালু করে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন। তবে এই ব্যবস্থা চালুর পর থেকেই রাজস্বের টাকা নিজেদের দাবি করে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কাজ বন্ধ রেখেছে ডিএসসিসি।

ডিএসসিসি বলছে, ই-পেমেন্ট ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা সরাসরি চলে যাওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। সংস্থাটির কর্মকর্তাদের দাবি, এ খাতে ফি বাবদ আয় সিটি করপোরেশনের তফসিলভুক্ত আয় হিসেবে আলাদা কোডের মাধ্যমে নিজস্ব তহবিলে জমা হতে হবে অথবা তাদের যা খরচ হয়, তার পুরোটা সরকারকে দিতে হবে।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বাংলা বলেন, স্থানীয় সরকার আইনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই দফতর থেকে যেসব সেবা দেওয়া হবে, সেজন্য যে ফি নেওয়া হবে, সেটা স্থানীয় সরকারের নিজস্ব আয় হওয়ার কথা। কিন্তু জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন ব্যয় করলেও আয় চলে যাচ্ছে সরাসরি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। তিনি জানান, সার্টিফিকেট প্রিন্ট, জনবল ও যন্ত্রপাতি ব্যবস্থাপনায় আমাদের যে টাকা খরচ হচ্ছে তা যেন আমরা পাই সে বিষয়েই মেয়র স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে জানিয়েছেন।

ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, ই-পেমেন্টে সব অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস তার আপত্তির কথা স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামকে জানিয়েছেন। মন্ত্রী এ জটিলতা নিরসনে তার একান্ত সচিব মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকীকে (যুগ্ম সচিব) দায়িত্ব দিয়েছেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি ডিএসসিসি ও রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেও এখন পর্যন্ত কোনও সমাধান করতে পারেননি।

মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বাংলা বলেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয় এবং ডিএসসিসি দুটোই স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিষ্ঠান। জন্মনিবন্ধনের যে খরচ সিটি করপোরেশন করে তা ই-পেমেন্টে আলাদা কোডের মাধ্যমে কীভাবে তারা পেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি খুব দ্রুত আমরা আলোচনা করে সমস্যাটি সমাধান করতে পারবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ