কানাডা-ভারত-ইস্যুতে-আগুনে-ঘি-ঢালছে-পাকিস্তানশিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারকে হত্যার ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে কানাডা-ভারত সম্পর্কে। ভারতের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক থাকা পাকিস্তান বলছে, কানাডা ভারতের সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে, এ অভিযোগ নিয়ে মোটেও তারা বিস্মিত নয়। এই হত্যার পেছনে ভারতের হাত অবশ্যই থাকতে পারে।
কানাডায় শিখ নেতা হত্যার পেছনে ভারতের হাত থাকতে পারে বলে অভিযোগ ওঠার মধ্যেই দুই দেশই দুই দেশের কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। এ অবস্থায় দেশ দুটির সম্পর্কের আগুনে যেন ঘি ঢালল পাকিস্তান।
ভারতের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক থাকা পাকিস্তান বলছে, কানাডা ভারতের সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে, এ অভিযোগ নিয়ে মোটেও তারা বিস্মিত নয়। এই হত্যার পেছনে ভারতের হাত অবশ্যই থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব সাইরাস কাজী। সেখানেই এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বুধবার ওই প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, কানাডায় ভারতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে পাকিস্তান আর বিস্মিত নয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী যে অভিযোগ তুলেছেন, এতে অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
আগের দিন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টোও একই ধরনের মন্তব্য করেছেন।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় চলতি বছরের মাঝামাঝিতে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারকে হত্যার ঘটনায় ভারতীয় এজেন্টদের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডা ‘নিবিড়ভাবে’ কাজ করছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন কানাডীয় সরকারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানান, জুনে ৪৫ বছর বয়সী হরদীপ সিংকে গুলি করে হত্যায় ভারতীয় এজেন্টদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগের সন্ধানে রয়েছে স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
কানাডীয় সরকারের কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি, যার মধ্যে সোমবার জনসমক্ষে আনা বিষয়টিও রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, কানাডার কাছে থাকা তথ্যপ্রমাণ ‘যথাসময়ে’ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেয়ার করা হবে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, শিখ নেতা হত্যাকাণ্ডের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। তিনি ভারত সরকারকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তে কানাডাকে সহায়তার তাগিদ দেন।
ট্রুডোর এ বক্তব্য দ্রুতই নাকচ করে কানাডার এক কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় ভারত। এর আগে সোমবার ভারতের শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করে কানাডা।
শিখ নেতার হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে কানাডার তদন্তে ভারতের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হলো। কানাডায় ভারতীয় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা নিয়ে নাখোশ নয়াদিল্লি।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে অটোয়া ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ও ট্রুডোর সাবেক পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা রোল্যান্ড প্যারিস বলেন, ‘এই ইস্যু (শিখ নেতা হত্যায় জড়িতদের তদন্ত) সমাধানের আগে দুই সরকারের মধ্যে স্বাভাবিক আলাপ-আলোচনা কঠিন হবে বলে আমি মনে করি।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, কানাডার তদন্তে সমর্থন রয়েছে তাদের।